আল্লাহ্, যিনি আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন [১], আর যিনি আকাশ হতে পানি বর্ষণ করে তা দিয়ে তোমাদের জীবিকার জন্য ফলমূল উৎপাদন করেন এবং যিনি নৌযানকে তোমাদের অনুগত করে দিয়েছেন যাতে তাঁর নির্দেশে সেগুলো সাগরে বিচরণ করে এবং যিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন নদীসমূহকে [২]।
____________________
[১] এ আয়াত এবং এর পরবর্তী কয়েকটি আয়াতে আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর অনেকগুলো নেয়ামত স্মরণ করিয়ে মানুষকে ‘ইবাদাত ও আনুগত্যের দাওয়াত দিয়েছেন। আল্লাহ্ বলেন, তিনিই এমন সত্তা, যিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন, যাদের উপর মানুষের অস্তিত্বের সূচনা ও স্থায়ীত্ব নির্ভরশীল। এরপর তিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন, যার সাহায্যে হরেক রকমের ফলফলাদি সৃষ্টি করেছেন। যাতে সেগুলো তাদের রিযক হতে পারে। অথচ তাঁর নিয়ামত অস্বীকার করা হচ্ছে, তাঁর বন্দেগী ও আনুগত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে, তাঁর সাথে জোর করে অংশীদার বানিয়ে দেয়া হচ্ছে। এসব সবই তাঁর দান, যাঁর দানের কোন সীমা-পরিসীমা নেই।
[২] আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহ্ তা’আলাই নৌকা ও জাহাজসমূহকে তোমাদের কাজে নিয়োজিত করেছেন। এরা আল্লাহ্র নির্দেশে নদ-নদীতে চলাফেরা করে। আয়াতে ব্যবহৃত (سَخَّرَ) শব্দের অর্থ (ذَلَّلَ وَيَسَّرَ) অনুগত করেছেন এবং উপকৃত হওয়া সহজ করেছেন। অর্থাৎ আল্লাহ্ তা’আলা কিছু জিনিস তোমাদের অনুগত করে দিয়েছেন। তন্মধ্যে কিছু এমন জিনিসও আছে যেগুলো থেকে কল্যাণ লাভ করা তোমাদের জন্য সহজ করে দিয়েছেন। সে হিসেবে আয়াতের অর্থ হবে, আল্লাহ্ তা’আলা ঐ সত্তা যিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন, অস্তিত্বহীন অবস্থা থেকে অস্তিত্বে নিয়ে এসেছেন। তিনি মেঘ থেকে বৃষ্টি নাযিল করেছেন। যা দ্বারা তিনি মৃত ভূমিকে জীবিত করেছেন। তা থেকে তিনি তোমাদের রিযকের ব্যবস্থা করেছেন। তোমাদের জন্য নৌকা ও জাহাজকে অনুগত ও সহজ করে দিয়েছেন যাতে তাঁর নির্দেশে সেটি সমুদ্রে তোমাদের উপকারার্থে চলাফেরা করে। আর নদীগুলোকে তোমাদের পান করার জন্য, তোমাদের চতুষ্পদ জন্তুদের পানের সুবিধার্থে, তোমাদের ক্ষেত-খামারে পানি দেয়ার স্বার্থে, অনুরূপ তোমাদের যাবতীয় উপকারার্থে অনুগত ও সহজ করে দিয়েছেন। [মুয়াসসার]