আপনি কি ম্নে করেন যে, কাহফ [১] ও রাকীমের [২] অধিবাসীরা আমাদের নিদর্শনাবলীর মধ্যে বিস্ময়কর [৩] ?
____________________
[১] كهف এর অর্থ বিস্তীর্ণ পার্বত্য গুহা। বিস্তীর্ণ না হলে তাকে غار বলা হয়। [কুরতুবী]
[২] رَقِيْم এর শাব্দিক অর্থ مرقوم বা লিখিত বস্তু। এ স্থলে কি বোঝানো হয়েছে, এ সম্পর্কে
তাফসীরবিদগণের বিভিন্ন উক্তি বর্ণিত রয়েছে-
(এক) সাঈদ ইবন জুবাইর বলেন, এর অর্থ একটি লিখিত ফলক। সমসাময়িক বাদশাহ এই ফলকে আসহাবে কাহফের নাম লিপিবদ্ধ করে গুহার প্রবেশপথে বুলিয়ে রেখেছিল। এ কারণেই আসহাবে কাহফকে রকীমও বলা হয়।
(দুই) মুজাহিদ বলেন, রকীম সে পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত উপত্যকার নাম, যাতে আসহাবে কাহফের গুহা ছিল।
(তিন) ইবন আব্বাস বলেন, সে পাহাড়টিই রকীম।
(চার) ইকরিমা বলেনঃ আমি ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে বলতে শুনেছি যে, রকীম কোন লিখিত ফলকের নাম না কি জনবসতির নাম, তা আমার জানা নেই।
(পাঁচ) কা'ব আহবার, ওয়াহাব ইবনে মুনাব্বেহ্, ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণনা করেন যে, রকীম রোমে অবস্থিত আয়লা অর্থাৎ আকাবার নিকটবতী একটি শহরের নাম। [ইবন কাসীর]
মূলতঃ ‘আসহাবে কাহফ’ ও ‘আসহাবে রকীম’ একই দলের দুই নাম, না তারা আলাদা দু’টি দল? এ মতভেদ নিয়েই উপরোক্ত মতপার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে। যদিও কোন সহীহ হাদীসে এ সম্পর্কে কোন সুস্পষ্ট বর্ণনা নেই, কিন্তু ইমাম বুখারী ‘সহীহ নামক গ্রন্থে আসহাবে কাহফ ও আসহাবে রকীমের দুটি আলাদা আলাদা শিরোনাম রেখেছেন। ইমাম বুখারীর এ কাজ থেকে বোঝা যায় যে, তার মতে আসহাবে কাহফ ও আসহাবে রকীম পৃথক পৃথক দু’টি দল। হাফেজ ইবনে হাজার ও অধিকাংশ তাফসীরবিদের মতে কুরআনের পূর্বাপর বর্ণনা অনুযায়ী আসহাবে কাহফ ও আসহাবে রকীম একই দল।
[৩] অর্থাৎ যে আল্লাহ এ আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, রাত-দিনের ব্যবস্থা করেছেন, সূর্য ও চন্দ্রকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং সমস্ত গ্রহ-নক্ষত্ররাজিকে তাদের কক্ষপথে নিয়মবদ্ধ করেছেন তাঁর শক্তিমত্তার পক্ষে কয়েকজন লোককে দু’তিনশো বছর পর্যন্ত ঘুম পাড়িয়ে রাখা তারপর তাদেরকে ঘুমাবার আগে তারা যেমন তর-তাজা ও সুস্থ-সবল ছিল ঠিক তেমনি অবস্থায় জাগিয়ে তোলা কি তোমরা কিছুমাত্র অসম্ভব বলে মনে কর? যদি চন্দ্র, সূর্য ও পৃথিবীর সৃষ্টি সম্পর্কে কেউ কখনো চিন্তা-ভাবনা করে তাহলে একথা কেউ মনে করতে পারে না যে, আল্লাহর জন্য এটা কোন কঠিন কাজ। মহান আল্লাহর জন্য তো এটা ক্ষুদ্র ব্যাপার। [দেখুন, ইবন কাসীর]