‘যে আমার উত্তরাধিকারিত্ত করবে [১] এবং উত্তরাধিকারিত্ত করবে ইয়া’কুবের বংশের [২] এবং হে আমার রব! তাকে করবেন সন্তোষভাজন।
____________________
[১] আলেমদের মতে, এখানে উত্তরাধিকারিত্বের অর্থ নবুওয়াত-রিসালত তথা ইলমের উত্তরাধিকার। আর্থিক উত্তরাধিকারিত্ব নয়। কেননা, প্রথমতঃ যাকারিয়্যার কাছে এমন কোন অর্থ সম্পদ ছিল বলেই প্রমাণ নেই, যে কারণে চিন্তিত হবেন যে, এর উত্তরাধিকারী কে হবে। একজন পয়গম্বরের পক্ষে এরূপ চিন্তা করাও অবান্তর। এছাড়া যাকারিয়্যা আলাইহিসসালাম নিজে কাঠ-মিস্ত্রি ছিলেন। নিজ হাতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কাঠ-মিস্ত্রির কাজের মাধ্যমে এমন সম্পদ আহরণ করা সম্ভব হয় না। যার জন্য চিন্তা করতে হয়। দ্বিতীয়ত: সাহাবায়ে কেরামের ইজমা তথা ঐকমত্য সম্বলিত এক হাদীসে বলা হয়েছেঃ "নিশ্চিতই আলেমগণ পয়গম্বরগণের ওয়ারিশ। পয়গম্বরগণ কোন দীনার ও দিরহাম রেখে যান না; বরং তারা ইলম ও জ্ঞান ছেড়ে যান। যে ব্যক্তি ইলম হাসিল করে, সে বিরাট সম্পদ হাসিল করে।”- [আবু দাউদ: ৩৬৪১, ইবনে মাজাহ: ২২৩, তিরমিয়ী: ২৬৮২] তৃতীয়ত: স্বয়ং আলোচ্য আয়াতে এর
يَرِّثُنِىْ وَيَرِثُ مِنْ اٰلِ يَعْقُوْبَ
বাক্যের যোগ এরই প্রমাণ যে, এখানে আর্থিক উত্তরাধিকারিত্ব বোঝানো হয়নি। কেননা, যে পুত্রের জন্মলাভের জন্যে দো'আ করা হচ্ছে, তার পক্ষে ইয়াকুব আলাইহিসসালামের উত্তরাধিকার হওয়াই যুক্তিযুক্ত কিন্তু তাদের নিকটবতী আত্মীয়স্বজনরা যাদের উল্লেখ আয়াতে করা হয়েছে, তারা নিঃসন্দেহে আত্মীয়তায় ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম থেকে অধিক নিকটবতী। নিকটবতী আত্মীয় রেখে দূরবর্তীর উত্তরাধিকারিত্ব লাভ করা উত্তরাধিকার আইনের পরিপন্থী। [ইবন কাসীর]
[২] অর্থাৎ আমি কেবলমাত্র নিজের উত্তরাধিকারী চাই না বরং ইয়াকুব বংশের যাবতীয় কল্যাণের উত্তরাধিকারী চাই। সে নবী হবে যেমন তার পিতৃপুরুষরা যেভাবে নবী হয়েছে। [ইবন কাসীর]


الصفحة التالية
Icon