নিশ্চয় যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে আল্লাহ্ তাদেরকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতে , যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তাদেরকে অলংকৃত করা হবে সোনার কাঁকন ও মুক্তা দ্বারা [১] এবং সেখানে তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ হবে রেশমের [২]।
____________________
তৃতীয় রুকু’
[১] মাথার মুকুট এবং হাতে কংকন পরিধান করা পূর্বকালের রাজা-বাদশাদের একটি স্বাতন্ত্র্যমূলক বৈশিষ্ট্য হিসেবে প্রচলিত ছিল। সাধারণ পুরুষদের মধ্যে যেমন মাথায় পরিধান করার প্রচলন নেই, এটা রাজকীয় ভূষণ, তেমনি হাতে কংকন পরিধান করাকেও রাজকীয় ভূষণ মনে করা হয়। তাই জান্নাতীদেরকে কংকন পরিধান করানো হবে। কংকন সম্পর্কে এই আয়াতে এবং সূরা ফাতির-এ বলা হয়েছে যে, তা স্বর্ণ নির্মিত হবে, কিন্তু সূরা নিসা-য় রৌপ্য নির্মিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে তাফসীরকারগণ বলেনঃ জান্নাতীদের হাতে তিন রকমের কংকন পরানো হবে- স্বর্ণ নির্মিত, রৌপ্য নির্মিত এবং মোতি নির্মিত। এই আয়াতে মোতির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। [কুরতুবী] জান্নাতীদের কংকন সম্পর্কে হাদীসে এসেছে, “মুমিনের কংকন ততটুকুতে থাকবে, যতটুকুতে তার অযু থাকবে। ” [মুসলিম: ২৫০]
[২] আলোচ্য আয়াতে আছে যে, জান্নাতীদের পোষাক রেশমের হবে। উদ্দেশ্য এই যে, তাদের সমস্ত পরিচ্ছদ, বিছানা, পর্দা ইত্যাদি রেশমের হবে। রেশমী বস্র দুনিয়াতে সর্বোত্তম গণ্য হয়। [কুরতুবী] বলাবাহুল্য, জান্নাতের রেশমের উৎকৃষ্টতার সাথে দুনিয়ার রেশমের মান কোন অবস্থাতেই তুল্য নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি দুনিয়াতে রেশমী বস্ত্ৰ পরিধান করবে, সে আখেরাতে তা পরিধান করবে না। [বুখারী: ৫৮৩৩] আবদুল্লাহ ইবন যুবায়ের রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, যে আখেরাতে রেশমী বস্ত্ৰ পরিধান করবে না। সে জান্নাতে প্ৰবেশ করবে না। কারণ, আল্লাহ তা'আলা বলেন, “আর তাদের পোষাক হবে রেশমী কাপড়”। [ইবন কাসীর]


الصفحة التالية
Icon