আপনি কি দেখতে পান না যে, আল্লাহ্‌ তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন [১] পৃথিবীতে যা কিছু আছে সেসবকে এবং তাঁর নির্দেশে সাগরে বিচরণশীল নৌযানসমূহকে? আর তিনিই আসমানকে [২] ধরে রাখেন যাতে তা পড়ে না যায় যমীনের উপর তাঁর অনুমতি ছাড়া। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ মানুষের প্রতি স্নেহপ্রবণ, পরম দয়ালু।
____________________
[১] অর্থাৎ আল্লাহ্‌ তা'আলা ভূপৃষ্ঠের জীবজন্তু, নিশ্চল বস্তুনিচয়, ক্ষেত-খামার, ফল-ফলাদি সবকিছুই মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন। যেমন অন্য আয়াতে বলেছেন, “আর তিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন আসমানসমূহ ও যমীনের সমস্ত কিছু নিজ অনুগ্রহে”। [সূরা আল-জাসিয়াঃ ১৩] [ইবন কাসীর] এখানে জানা দরকার যে, যমীনের সবকিছুকে মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন, আজ্ঞাধীন করে দেননি। কারণ, আজ্ঞাধীন করে দিলে এর পরিণাম স্বয়ং মানুষের জন্য ক্ষতিদায়ক হত। কারণ, মানুষের স্বভাব, আশা-আকাঙ্খা ও প্রয়োজন বিভিন্নরূপ। একজন নদীকে একদিকে গতি পরিবর্তন করার আদেশ করত, অন্যজন তার বিপরীত দিকে আদেশ করত। এর পরিণাম অনৰ্থ সৃষ্টি ছাড়া কিছুই হত না। এ কারণেই আল্লাহ্‌ তা'আলা। সবকিছুকে আজ্ঞাধীন তো নিজেরই রেখেছেন, কিন্তু অধীন করার যে আসল উপকার তা মানুষকে পোঁছে দিয়েছেন।
[২] অর্থাৎ আল্লাহ্‌র বিশেষ রহমত যে, তিনি আকাশকে যমীনের উপর ছেড়ে দেন না। যদি তাঁর রহমত ও শক্তি তা না করত, তবে আসমান যমীনের উপর পড়ে যেত। ফলে এতে যা আছে তা ধ্বংস হয়ে যেত। যেমন অন্য আয়াতে আল্লাহ্‌ বলেন, “অবশ্যই আল্লাহ্‌ আসমানসমূহ ও যমীনকে ধারণ করেন, যাতে তারা স্থানচ্যুত না হয়, আর যদি তারা স্থানচু্যত হয় তবে তিনি ছাড়া কেউ তাদেরকে ধরে রাখতে পারে না। অবশ্যই তিনি অতি সহনশীল, ক্ষমাপরায়ণ।” [সূরা ফাতিরঃ ৪১] [সা‘দী]


الصفحة التالية
Icon