‘আর আপনাদের এ উম্মত তো একই উম্মত [১] এবং আমিই আপনাদের রব; অতএব আমারই তাকওয়া অবলম্বন করুন [২]।’
____________________
[১] “তোমাদের উম্মত একই উম্মত”। অর্থাৎ তোমরা একই দলের লোক। أمة শব্দটি যদিও সম্প্রদায় ও কোন বিশেষ নবীর জাতির অর্থে প্রচলিত ও সুবিদিত, তবুও কোন কোন সময় তরীকা ও দ্বীনের অর্থেও ব্যবহৃত হয়। যেমন
إِنَّا وَجَدْنَا آبَاءَنَا عَلَىٰ أُمَّةٍ
“আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে একটি দ্বীনে (তরীকা বা জীবনপদ্ধতিতে) পেয়েছি”। [সূরা আয-যুখরুফঃ ২২-২৩] তাই “উম্মত” শব্দটি এখানে এমন ব্যক্তি সমষ্টির জন্য ব্যবহৃত হয়েছে যারা কোন সম্মিলিত মৌলিক বিষয়ে একতাবদ্ধ। নবীগণ যেহেতু স্থান-কালের বিভিন্নতা সত্ত্বেও একই বিশ্বাস ও একই দাওয়াতের উপর একতাবদ্ধ ছিলেন, তাই বলা হয়েছে, তাঁদের সবাই একই উম্মত। [দেখুন, কুরতুবী; ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর] পরবর্তী বাক্য নিজেই সে মৌলিক বিষয়ের কথা বলে দিচ্ছে যার উপর সকল নবী একতাবদ্ধ ও একমত ছিলেন। আর তা হলো, একমাত্র আল্লাহ্র ইবাদত করা। যার অপর নাম ইসলাম। নবীরা সবাই ইসলামের দিকে আহবান জানিয়েছেন। তাদের দ্বীনও ছিল ইসলাম। তাদের অনুসারীরাও ছিল মুসলিম। এ হিসেবে সমস্ত নবী-রাসূল ও তাদের সত্যিকারের উম্মতগণ একই উম্মত হিসেবে গণ্য। তারা সবাই মুসলিম উম্মত।
[২] আয়াতের মূল বক্তব্য হচ্ছে, নূহ আলাইহিস সালাম থেকে নিয়ে ঈসা আলাইহিস সালাম পর্যন্ত সকল নবী যখন এ তাওহীদ ও আখেরাত বিশ্বাসের শিক্ষা দিয়ে এসেছেন তখন অনিবাৰ্যভাবে এ থেকে প্রমাণ হয়, এ ইসলামই মানুষের জন্য আল্লাহ্র মনোনীত দ্বীন। সুতরাং একমাত্র তাঁরই তাকওয়া অবলম্বন করা উচিত। তাঁকেই রব মানা এবং তাঁরই কেবল ইবাদাত করাই এর দাবী। এমন কোন কাজ করো না যা তোমাদের উপর আমার আযাবকে অবশ্যম্ভাবী করে দিবে। যেমন আমার সাথে শির্ক করা, অথবা আমার নির্দেশের বিরোধিতা, আমার নিষেধের বিপরীত কাজ করা। [ফাতহুল কাদীর] এ আয়াত অন্য আয়াতের মত যেখানে বলা হয়েছে, আর নিশ্চয় মসজিদসমূহ আল্লাহ্রই জন্য। কাজেই আল্লাহ্র সাথে তোমরা অন্য কাউকে ডেকো না।" [সূরা আল-জিনঃ ১৮] [কুরতুবী]