সুলাইমান বললেন, ‘হে পরিষদবর্গ ! তারা আত্মসমর্পণ করে [১] আমার কাছে আসার [২] আগে তোমাদের মধ্যে কে তার সিংহাসন আমার কাছে নিয়ে আসবে ?
____________________
[১] মূলে مسلمين শব্দ আছে। যার আভিধানিক অর্থ, আত্মসমর্পণ। এখানে কোন কোন মুফাসসির আভিধানিক অর্থ হওয়াটাকেই বেশী প্রাধান্য দিয়েছেন। কেননা, সে তখনো ইসলাম গ্রহণ করেনি। সে মূলতঃ আত্মসমৰ্পন করতেই আসছিল। পরবর্তী বিভিন্ন আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, সাবার রাণী সুলাইমান আলাইহিসসালামের দরবারে আসার পর বিভিন্ন নিদর্শণাবলী দেখার পর ঈমান এনেছিল। তাই এখানে ইসলাম শব্দের আভিধানিক অর্থ গ্রহণই অধিক যুক্তিসম্মত। [দেখুন, মুয়াসসার] তবে এখানে পারিভাষিক অর্থে মুসলিম হয়ে যাওয়ার অর্থও গ্রহণ করা যেতে পারে। কারণ, যদি মুসলিম হয়ে যায় তবে তার সম্পদের উপর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না। [দেখুন, ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর; সা‘দী]
[২] সুলাইমান আলাইহিসসালামের কথা ও কর্মকান্ড ও তার প্রতিপত্তি দেখে সাবার রাণীর দূতগণ হতভম্ব হয়ে প্রত্যাবর্তন করল। সুলাইমান আলাইহিসসালামের যুদ্ধ ঘোষণার কথা শুনিয়ে দিলে সাবার রাণী তার সম্প্রদায়কে বলল, পূর্বেও আমার এই ধারণা ছিল যে, সুলাইমান দুনিয়ার সম্রাটদের ন্যায় কোন সম্রাট নন; বরং তিনি আল্লাহ্র কাছ থেকে বিশেষ পদমর্যাদাও লাভ করেছেন। আল্লাহ্র নবীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা আল্লাহ্র বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নামান্তর। এরূপ শক্তি আমাদের নেই। এ কথা বলে সে সুলাইমান আলাইহিসসালামের দরবারে হাযির হওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিল। সুলাইমান আলাইহিসসালাম সেটা বুঝতে পেরে তার সভাষদদের মধ্যে জানতে চাইলেন যে, কে এমন আছে যে বিলকীসের সিংহাসনটি সে আসার আগেই এখানে আনতে পারে? কারণ, তিনি চাইলেন যে বিলকীস রাজকীয় শক্তি ও শান-শওকতের সাথে একটি নবীসুলভ মু‘জিযাও প্রত্যক্ষ করুক। এটা তার ঈমান আনার অধিক সহায়ক হবে। [দেখুন, ইবন কাসীর; ফাতহুল কাদীর; সা‘দী]