তারা আরও বলেছে, 'আমরা ধনে-জনে সমৃদ্ধশালী ; আর আমাদেরকে কিছুতেই শাস্তি দেয়া হবে না [১]।
____________________
[১] এখানে তাদের উক্তি বর্ণিত হয়েছেঃ “আমরা ধনে-জনে সবদিক দিয়েই তোমাদের অপেক্ষা বেশী সমৃদ্ধ। সুতরাং আমরা আযাবে পতিত হব না।' (বাহ্যতঃ তাদের উক্তির উদ্দেশ্য ছিল এই যে, আল্লাহ তা'আলার কাছে আমরা শাস্তিযোগ্য হলে আমাদের এই বিপুল ধনৈশ্বৰ্য কেন দিতেন?) ৩৬ ও ৩৭ আয়াতে তাদের জওয়াব দেয়া হয়েছে যে, দুনিয়াতে ধন-সম্পদ, মান-সম্মান ও প্রভাব প্রতিপত্তির হ্রাস-বৃদ্ধি আল্লাহর কাছে প্রিয়-অপ্রিয় হওয়ার দলীল নয়; বরং সৃষ্টিগত সুবিবেচনার ভিত্তিতে দুনিয়াতে আল্লাহ তা'আলা যাকে ইচ্ছা অগাধ ধন-সম্পদ দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা কম দেন। এর রহস্য তিনিই জানেন। ধন-সম্পদের প্রাচুর্যকে আল্লাহর প্রিয় হওয়ার দলীল মনে করা মূর্খতা। আল্লাহর প্রিয় হওয়া একমাত্র ঈমান ও সৎকর্মের উপর নির্ভরশীল। যে ব্যক্তি এগুলো অর্জন করে না, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততির প্রাচুর্য তাকে আল্লাহর প্রিয়পাত্ৰ করতে পারে না। এ বিষয়বস্তুটি পবিত্র কুরআন বিভিন্ন আয়াতে ব্যক্ত করেছে। এক আয়াতে আছেঃ “তারা কি মনে করে যে, আমি ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দ্বারা তাদেরকে যে সাহায্য করি, তা তাদের জন্যে পরিণাম ও আখেরাতের দিক দিয়েও মঙ্গলজনক ? (কখনই নয়) বরং তারা আসল সত্য সম্পর্কে বে-খবর।' [সূরা আল-মুমিনুন: ৫৫-৫৬] (অর্থাৎ তারা বেখবর যে, যে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি মানুষকে আল্লাহ থেকে গাফেল করে দেয়, তা তাদের জন্যে শাস্তিস্বরূপ) এ ছাড়াও পবিত্র কুরআন মজীদের বিভিন্ন স্থানে দুনিয়া পূজারীদের এ বিভ্রান্তির উল্লেখ করে তা খণ্ডন করা হয়েছে। [দৃষ্টান্ত স্বরূপ নিম্নোক্ত স্থানগুলো দেখুনঃ আল বাকারাহ, ১২৬, ২১২; আত তাওবাহ, ৫৫, ৬৯; হূদ, ৩, ২৭; আর রা'দ, ২৬; আল কাহফ, ৩৪-৪৩; , মারইয়াম, ৭৩-৭৭; ত্বা-হা, ১৩১; আল মুমিনুন, ৫৫-৬১; আশ্ শু'আরা, ১১১; আল কাসাস, ৭৬-৮৩; আর রূম, ৯; আল মুদ্দাসসির, ১১—২৬; এবং আল ফাজর, ১৫২০;] আয়াত। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহ তোমাদের রূপ ও ধন-সম্পদ দেখেন না, তিনি তোমাদের অন্তর ও কাজকর্ম দেখেন। [মুসলিম :২৫৬৪]