নিশ্চয় রাতের বেলার উঠা [১] প্রবৃত্তি দলনে প্রবলতর [২] এবং বাকস্ফুরণে অধিক উপযোগী [৩] ।
____________________
[১] باشىٔة শব্দের ব্যাখ্যায় কয়েকটি মত আছে। একটি মত হলো, এর মানে রাতের বেলা শয্যা ত্যাগকারী ব্যক্তি। দ্বিতীয় মতটি হলো এর অর্থ রাত্রিকালীন সময়। [ইবন কাসীর]
[২] আয়াতে وطأً শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এর অর্থ এতো ব্যাপক যে, একটি মাত্ৰ বাক্যে তা বুঝানো সম্ভব নয়। এর একটি অর্থ হলো, রাতের বেলা ইবাদাত-বন্দেগীর জন্য শয্যা ত্যাগ করে ওঠা এবং দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকা যেহেতু মানুষের স্বভাব-বিরুদ্ধ কাজ, মানুষের মন ও প্রবৃত্তি এ সময় আরাম কামনা করে, তাই এটি এমন একটি কাজ ও চেষ্টা-সাধনা যা প্রবৃত্তির জন্য অত্যন্ত কঠিন। দ্বিতীয় অর্থ হলো, রাত্ৰিবেলার সালাত দিনের সালাত অপেক্ষা অধিক স্থায়ী ও ফলপ্রসু। কেননা, দিনের বেলা মানুষের চিন্তা-চেতনা বিভিন্ন বিষয়ে ব্যস্ত থাকে, কিন্তু রাত্ৰিবেলা তা থেকে মুক্ত হয়। আরেকটি অর্থ হলো, ইবাদতকারী ব্যক্তিকে সক্রিয় রাখার পন্থা, কেননা রাত্ৰিবেলা বিভিন্ন চিন্তা-চেতনা ও কাজ থেকে মুক্ত হওয়ায় সে সময়ে ইবাদতে নিবিষ্ট হওয়া যায়। [কুরতুবী]
[৩] أقوم শব্দের অর্থ অধিক সঠিক। আর قيلاً শব্দের অর্থ কথা। তাই এর আভিধানিক অর্থ হলো, ‘কথাকে আরো বেশী যথার্থ ও সঠিক বানায়।’ অর্থাৎ রাত্ৰিবেলায় কুরআন তেলাওয়াত অধিক শুদ্ধতা ও স্থিরতা সহকারে হতে পারে। এর মূল বক্তব্য হলো, সে সময় মানুষ আরো বেশী প্রশান্তি, তৃপ্তি ও মনোযোগ সহকারে বুঝে কুরআন শরীফ পড়তে পারে। কারণ, তখন বিভিন্ন প্রকার ধ্বনি ও হট্টগোল দ্বারা অন্তর ও মস্তিস্ক ব্যাকুল হয় না। [দেখুন, ফাতহুল কাদীর] ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা এর ব্যাখ্যা করেছেন “গভীর চিন্তা-ভাবনা ও মনোনিবেশসহ কুরআন পাঠের জন্য এটা একটা অপেক্ষাকৃত উপযুক্ত সময়।” [আবু দাউদ: ১৩০৪]


الصفحة التالية
Icon