নিশ্চয় আপনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারীই তো নির্বংশ [১]।
____________________
[১] সাধারণতঃ যে ব্যক্তির পুত্ৰ সন্তান মারা যায়, আর তাকে أبتر বা নির্বংশ বলা হত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পুত্র কাসেম অথবা ইবরাহীম যখন শৈশবেই মারা গেলেন, তখন কাফেররা তাকে নির্বংশ বলে উপহাস করত। একবার কা‘ব ইবনে আশরাফ ইয়াহূদী সর্দার মক্কায় আগমন করল। কুরাইশের নেতারা তাকে বলল, আপনি কি মদীনাবাসীদের উত্তম ব্যক্তি ও নেতা? সে বলল, হ্যাঁ, তখন তারা বলল, আপনি কি দেখেন না এই লোকটি যে তার জাতির মধ্যে নির্বংশ সে মনে করে সে আমাদের থেকে উত্তম? অথচ আমরা, হজ ও কাবাঘরের সেবায়েত। তখন কা‘ব ইবনে আশরাফ বলল, তোমরা তার থেকে উত্তম। তখন এ আয়াত নাযিল হয়, এতে বলা হয়, “নিশ্চয় আপনার শক্ররাই তো নির্বংশ।” আরও নাযিল হয়, আপনি কি দেখেননা তাদেরকে যাদের কিতাবের কিছু অংশ দেয়া হয়েছিল, তারা মূর্তি ও তাগুতের উপর ঈমান রাখে...” । [সূরা আন-নিসা: ৫১,৫২, হাদীসটি বর্ণনা করেন, নাসায়ী, কিতাবুত-তাফসীর, ২/৫৬০, নং: ৭২৭, ইবনে হিব্বান, ৬৫৭২] এ আয়াতের মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি নির্বংশ বলে যে দোষারোপ করা হতো তার জওয়াব দেয়া হয়েছে। শুধু পুত্রসন্তান না থাকার কারণে যারা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নির্বংশ বলে বা তার বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষণ করে, তারা তার প্রকৃত মর্যাদা সম্পর্কে বেখবর। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বংশগত সন্তান-সন্ততি ও কেয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে, যদিও তা কন্যা-সন্তানের তরফ থেকে হয়। তাছাড়া নবীর আধ্যাতিক সন্তান অর্থাৎ উম্মত তো এত অধিকসংখ্যক হবে যে, পূর্ববর্তী সকল নবীর উম্মতের সমষ্টি অপেক্ষাও বেশী হবে। এছাড়া এ সূরায় রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে আল্লাহ্ তা‘আলার কাছে প্রিয় ও সম্মানিত তাও বিবৃত হয়েছে। [আদওয়াউল বায়ান]


الصفحة التالية
Icon