আমার বান্দাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে আপনি বলুন, ‘সালাত কায়েম করতে এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করতে [১]---সে দিনের আগে যে দিন থাকবে না কোন বেচা- কেনা এবং থাকবে না বন্ধুত্বও [২]।’
____________________
[১] এ আয়াতে মু’মিন বান্দাদের জন্য বিরাট সুসংবাদ ও সম্মান রয়েছে। প্রথমে আল্লাহ্ তা’আলা তাদেরকে নিজের বান্দা বলেছেন, এরপর ঈমান-গুণে গুণান্বিত করেছেন, অতঃপর তাদেরকে চিরস্থায়ী সুখ ও সম্মান দানের পদ্ধতি বলে দিয়েছেন যে, তারা সালাত কায়েম করুক। এর মানে হচ্ছে, মু’মিনদের হতে হবে কৃতজ্ঞ। আর এ কৃতজ্ঞতার বাস্তব রূপ ফুটিয়ে তোলার জন্য এদের সালাত কায়েম এবং আল্লাহ্র পথে অর্থ ব্যয় করতে হবে। সালাতের সময় অলসতা এবং সালাতের সুষ্ঠু নিয়মাবলীতে ক্রটি না করা চাই। এছাড়া আল্লাহ্ প্রদত্ত রিযক থেকে কিছু তাঁর পথেও ব্যয় করুক। ব্যয় করার উভয় পদ্ধতিকেই বৈধ রাখা হয়েছে- গোপনে অথবা প্রকাশ্যে। কোন কোন আলেম বলেনঃ ফরয যাকাত, ফিৎরা ইত্যাদি প্রকাশ্যে হওয়া উচিত- যাতে অন্যরাও উৎসাহিত হয়, আর নফল দান-সদকা গোপনে করা উচিত যাতে রিয়া ও নাম-যশ অর্জনের মত মনোভঙ্গি সৃষ্টির আশংকা না থাকে। [কুরতুবী] ব্যাপারটি আসলে নিয়তের উপর নির্ভরশীল। যদি প্রকাশ্যে দান করার মধ্যে রিয়া ও নাম-যশের নিয়ত থাকে, তবে দানের ফযীলত শেষ হয়ে যায়- তা ফরয হোক কিংবা নফল। পক্ষান্তরে যদি অপরকে উৎসাহিত করার নিয়ত থাকে, তবে ফরয ও নফল উভয় ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে দান করা বৈধ। [দেখুন, তাফসীর ইবন কাসীর ১/৭০১; সূরা আল-বাকারার ২৭১ নং আয়াতের তাফসীর]
[২] তারপর আল্লাহ্ তা’আলা সালাত কায়েম করতে এবং গোপনে ও প্রকাশ্যে দান করাকে দ্রুত করতে বলেছে। [ইবন কাসীর] কারণ, কখন কিয়ামত এসে যায় তখন আর তারা এগুলো করতে সক্ষম হবে না। কারণ সেদিন কোন লেন-দেনের মাধ্যমে নিজের আযাবকে অন্যের কাছে স্থানান্তর করতে পারবে না। অনুরূপভাবে সেদিন কোন বন্ধুও তার জন্য কিছু দিতে পারবে না। [সা’দী] অন্য আয়াতে আল্লাহ্ তা’আলা তা আরো স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেনঃ
“হে মু’মিনগণ! আমি যা তোমাদেরকে দিয়েছি তা থেকে তোমরা ব্যয় কর সেদিন আসার আগে, যেদিন কেনা-বেচা, বন্ধুত্ব ও সুপারিশ থাকবে না এবং কাফিররাই যালিম।” [সূরা আল-বাকারাহঃ ২৫৪]