surah.translation .

১. আলিফ লা-ম মীম। এসব ব্যাপারে আলোচনা সূরা বাক্বারার শুরুতে অতিক্রান্ত হয়েছে।
২. হে রাসূল! আপনার উপর অবতীর্ণ এসব আয়াতগুলো এমন কিতাবে অন্তর্ভুক্ত যে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার কথা বলে।
৩. এটি স্বীয় রবের অধিকার ও তাঁর বান্দাদের অধিকার আদায়পূর্বক উত্তম আমলকারীদের জন্য হেদায়েত ও রহমত।
৪. যারা সর্বোত্তম পন্থায় নামায আদায় করে এবং তাদের সম্পদের যাকাত প্রদান করে, সাথে সাথে তারা পরকালের পুনরুত্থান, হিসাব, প্রতিদান ও শাস্তি সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস পোষণ করে।
৫. এহেন গুণাবলীর মাধ্যমে গুণান্বিত ব্যক্তিগণ স্বীয় প্রভুর হিদায়তের উপর প্রতিষ্ঠিত। আর তারাই তাঁর পক্ষ থেকে কাঙ্খিত বিষয় প্রাপ্তি ও ভীতির বিষয় থেকে নিস্কৃতি লাভের মাধ্যমে ধন্য।
৬. কিছু মানুষ এমন রয়েছে, -যেমন: নাযর বিন হারিস- যে মনোমুগ্ধকর কথা দিয়ে মানুষদেরকে মূর্খতাবশতঃ আল্লাহর দ্বীন থেকে ফিরিয়ে রাখে আর আল্লাহর আয়াতসমূহকে ঠাট্টা-বিদ্রƒপের বিষয় হিসাবে গ্রহণ করে থাকে এদের জন্য রয়েছে পরকালে অপমানকর শাস্তি।
৭. আর তার নিকট যখন আমার আয়াতসমূহ পাঠ করা হয় তখন সে না শুনার ভান করে অহঙ্কার ভরে পিছনে ফিরে যায়। যেন তাকে শ্রবণ থেকে বঞ্চিত রাখার জন্য তার কান দু’টোকে তুলা দ্বারা বন্ধ করা হয়েছে। হে রাসূল! আপনি তাকে অপেক্ষমাণ কষ্টদায়ক শাস্তির দুঃসংবাদ দান করুন।
৮. অবশ্যই যারা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে এবং সৎ কাজ করেছে তাদের জন্য রয়েছে উপভোগ্য উদ্যানসমূহ। তথায় তারা আল্লাহর প্রস্তুতকৃত নি‘আমত উপভোগ করবে।
৯. তারা তথায় অবস্থান করবে। আল্লাহ এবিষয়ে তাদের সাথে সন্দেহাতীতভাবে সত্যিকার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি পরাক্রমশালী; তাঁকে পরাস্তকারী কেউ নেই। তিনি তাঁর সৃষ্টি, প্রতিপালন ও বিধান রচনায় প্রজ্ঞাময়।
১০. আল্লাহ আসমানসমূহকে শূন্যের উপর কোনরূপ খুঁটি বিহীনভাবে সৃষ্টি করেছেন। আর যমীনে প্রতিষ্ঠিত পাহাড়সমূহ এমনভাবে স্থির করেছেন যেন সে তোমাদেরকে নিয়ে হেলে না যায়। আর যমীনে বিভিন্নরূপী প্রাণী ছড়িয়ে দিয়েছেন। তাছাড়া আমি আসমান থেকে বৃষ্টির পানি বর্ষিয়েছি এবং তদ্বারা যমীনে সর্বপ্রকার গাছ-গাছালি দিয়ে নজরকাড়া দৃশ্যের অবতারণা করেছি। যা থেকে মানুষ ও প্রাণী উপকৃত হয়।
১১. উল্লেখিত বিষয়াবলী সবই আল্লাহর সৃষ্টি। এবার তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের এবাদত করো তারা কী সৃষ্টি করেছে দেখাও। বলা বাহুল্য যে, জালিমরা হক্ব থেকে সুস্পষ্ট ভ্রষ্টতার মধ্যে নিমজ্জিত। কেননা, তারা স্বীয় প্রতিপালকের সাথে তাদেরকে শরীক করে যারা কিছুই সৃষ্টি করেনি বরং তারাই সৃষ্ট।
১২. আর আমি লুকমানকে দ্বীনের বুঝ ও সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সূ² জ্ঞান দান করেছি। তাকে বলেছি, হে লুকমান! তুমি তোমার রবের শুকরিয়া আদায় করো ওই নি‘আমতের যা তিনি তাঁর আনুগত্যের তাওফীক দানের মাধ্যমে তোমাকে দান করেছেন। বস্তুতঃ যে শুকরিয়া আদায় করে মূলতঃ সে নিজেরই উপকার করলো। কেননা, আল্লাহ তাঁর শুকরিয়া পাওয়ার অমুখাপেক্ষী। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি আল্লাহ প্রদত্ত নি‘আমতের প্রতি অকৃতজ্ঞ হয় তার ক্ষতি তাকেই পোহাতে হবে। সে আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবে না। কেননা, তিনি তাঁর সকল সৃষ্টির প্রতি মুখাপেক্ষিতার ঊর্ধ্বে, সর্বাবস্থায় তিনি প্রশংসিত।
১৩. হে রাসূল! আপনি স্মরণ করুন সেদিনের কথা যেদিন লুক্বমান তার ছেলেকে ভাল কাজে উদ্বুদ্ধ করতে ও মন্দ কাজে সতর্ক করতে গিয়ে বলেছিল: হে আমার প্রিয় বৎস! আল্লাহর সাথে অন্যের এবাদত করো না। কেননা, আল্লাহ ব্যতীত অন্যের এবাদত মহা অন্যায়। তা এমন মহা পাপ যদ্বারা মানুষ চিরস্থায়ী জাহান্নামী হয়।
১৪. আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার ও ¯্রষ্টার অবাধ্যতা ব্যতিরেকে তাঁর আনুগত্যের নির্দেশ দিয়েছি। তার মাতা তাকে কষ্টের পর কষ্ট স্বীকার করে ধারণ করেছে এবং দু’ বৎসর তাকে দুধ পান শেষ করিয়েছে। আমি তাকে এও বলেছি যে, তুমি তোমার প্রতি আল্লাহপ্রদত্ত নি‘আমতের শুকরিয়া আদায় করো। অতঃপর মাতা-পিতা কর্তৃক তোমার লালন-পালনের উপর তাদের শুকরিয়া আদায় করো। কেবল আমার প্রতিই সবার প্রত্যাবর্তন হবে। তখন প্রত্যেককে আমি যার যার পাওনা বুঝিয়ে দেব।
১৫. আর যদি পিতা-মাতা তোমাকে আমার সাথে অন্যকে শরীক করার জন্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায় তবে তুমি তাতে তাদের আনুগত্য করবে না। কেননা, সৃষ্টিকর্তার অবাধ্যতায় সৃষ্টির কোন আনুগত্য চলে না। তবে তাদের সাথে দুনিয়াতে সদাচরণ, জ্ঞাতিবন্ধন বজায় রাখাসহ ভাল ব্যবহার করবে। আর একত্ববাদ ও আনুগত্যের কাজে আমার প্রতি ধাবিত ব্যক্তির পথ ধরে চলবে। পরিশেষে ক্বিয়ামতের দিন সবাই আমার দিকে প্রত্যাবর্তন করবে। তখন আমি তোমাদের দুনিয়ার কৃতকর্ম সম্পর্কে সংবাদ প্রদান করবো এবং তার প্রতিদান দেবো।
১৬. হে আমার প্রিয় বৎস! পাপ যতই ছোট হোকনা কেন যেমন: সরিষার কণা সদৃশ এবং সে যদি পাথরের পেটেও অবস্থান করে -যার খবর কেউ জানে না- কিংবা আসমান- যমীনের কোন গোপন স্থানে অবস্থান করে তবুও আল্লাহ ক্বিয়ামত দিবসে তা উপস্থিত করবেন এবং এর মাধ্যমে বান্দাকে প্রতিদান প্রদান করবেন। আল্লাহ সূ²দর্শী। তাঁর নিকট কোন গোপন বিষয়ই গোপন থাকে না। আর তিনি সর্বজ্ঞাতা; তাঁর নিকট কোন বিষয়ের আসল রূপ ও স্থান অজানা নয়।
১৭. হে আমার প্রিয় বৎস! তুমি পূর্ণভাবে নামায প্রতিষ্ঠা করো, সৎ কাজের আদেশ দাও, অসৎ কাজে বাধা প্রদান করো। আর এই পথে যা কিছু পোহাতে হয় তাতে ধৈর্য ধারণ করো। তোমাকে আল্লাহর পক্ষ থেকে দৃঢ় প্রত্যয়সহ যে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে সে কাজে কোনরূপ শিথিলতার অবকাশ নেই।
১৮. আর তুমি অহঙ্কার ভরে মানুষ থেকে মুখ ফিরিয়ে রেখো না। এমনিভাবে যমীনের উপর দম্ভ ভরে হাটবে না। কেননা, যারা দম্ভ ভরে হাটে, নি‘আমতের উপর অহঙ্কার করে তার শুকরিয়া আদায় করে না আল্লাহ তাদের কাউকে পছন্দ করেন না।
১৯. তোমার চলার মধ্যে দ্রæততা ও ধীর গতির মধ্যবর্তী পন্থা অবলম্বন করো। যাতে ভাবগাম্ভির্যতা প্রকাশ পায়। আর তোমার স্বর নি¤œগামী করো। কষ্টদায়কভাবে উচ্চগামী করোনা। কেননা, উচ্চগামী হওয়ার ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা কর্কশ স্বর হচ্ছে গাধার স্বর।
২০. হে মানব সমাজ! তোমরাকি দেখনা যে, আল্লাহ তোমাদের জন্য আসমানে অবস্থিত সূর্য, চন্দ্র ও তারকারাজি থেকে উপকৃত হওয়ার ব্যবস্থা করেছেন যেমন যমীন থেকে পশু, বৃক্ষরাজি ও উদ্ভিদ দ্বারা উপকৃত হওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এমনিভাবে তিনি তোমাদের উপর তাঁর নি‘আমতকে প্রকাশ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন যেমন: আকার-আকৃতির সৌন্দর্য। আবার অপ্রকাশ্যেও তাঁর নি‘আমতকে ছড়িয়ে দিয়েছেন যেমন: বিবেক ও বিদ্যা। অথচ এতসব নি‘আমত পাওয়া সত্তে¡ও কিছু মানুষ আল্লাহর একত্ববাদের ব্যাপারে ওহী, আলোকিত বিবেক কিংবা আল্লাহ কর্তৃক অবতারিত কিতাব নির্ভর জ্ঞান ব্যতিরেকে ঝগড়া করে।
২১. আর যখন আল্লাহর একত্ববাদের ব্যাপারে ঝাগড়ায় লিপ্ত ব্যক্তিদেরকে বলা হয় যে, আল্লাহ তদীয় রাসূলের উপর যে ওহী নাযিল করেছেন তোমরা তার অনুসরণ করো তখন তারা বলে: আমরা তার অনুসরণ করবো না বরং আমরা আমাদের দেবতার পূজায় আমাদের বাপ-দাদার অনুসরণ করবো। তবে কি তারা তাদের পূর্বপুরুষদের অনুসরণ সেখানেও করবে যেখানে শয়তান মূর্তি পূজার মাধ্যমে পথভ্রষ্ট করে পরকালে তাদেরকে জাহান্নামের দিকে ডেকে নেয়?!
২২. যে ব্যক্তি আল্লাহর এবাদত ও আমলে খাঁটি ও সুন্দরভাবে মনোনিবেশ করবে সে মূলত ওই ব্যক্তির ন্যায় সর্বাপেক্ষা মজবুত হাতল আঁকড়ে ধরলো যে এমনভাবে তা ধারণ করে যা হাত ছাড়া হওয়ার নয়। বস্ততঃ আল্লাহর দিকেই প্রত্যেক বিষয়াদির প্রত্যাবর্তন ও ফিরে যাওয়া। ফলে তিনি প্রত্যেককে যার যার পাওনা অনুযায়ী প্রতিদান দিবেন।
২৩. আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে অস্বীকার করবে তার কুফুরি যেন তোমাকে হে রাসূল! চিন্তিত না করে। কেননা, তারা প্রত্যেকেই ক্বিয়ামতের দিন আমার দিকে প্রত্যাবর্তন করবে। ফলে তারা কী করেছিল তার সংবাদ আমি তাদেরকে জানিয়ে দিব এবং তার প্রতিদানও প্রদান করবো। আল্লাহ অন্তরে অবস্থিত বিষয়ের খবর রাখেন। তাঁর নিকট এসবের কোন বিষয় গোপন থাকে না।
২৪. আমি দুনিয়ার জীবনে আমার পক্ষ থেকে তাদেরকে প্রদত্ত ভোগ সামগ্রী কিছু কাল উপভোগ করাবো। অতঃপর তাদেরকে ক্বিয়ামত দিবসে জাহান্নামের কঠিন শাস্তির দিকে ঠেলে দিব।
২৫. আর যদি তুমি হে রাসূল! এই সব মুশরিকদেরকে প্রশ্ন করো যে, কে আসমান-যমীন সৃষ্টি করেছে? তবে তারা অবশ্যই বলবে: তা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। তখন তুমি তাদেরকে বলো: সকল প্রশংসা আল্লাহর যিনি তোমাদের সামনে প্রমাণ হাজির করেছেন। কিন্তু তাদের বেশীরভাগই মূর্খতাবশতঃ কে প্রশংসার হক্বদার তা’ই জনে না।
২৬. আসমান-যমীনে যা কিছু রয়েছে তা সবই সৃষ্টি, আধিপত্য ও পরিচালনার দিক থেকে কেবলই আল্লাহর। আল্লাহ অবশ্যই সকল সৃষ্টির প্রতি অমুখাপেক্ষী। তিনি ইহ ও পরকালে প্রশংসিত।
২৭. যদি যমীনে যত বৃক্ষরাজি রয়েছে সেগুলোকে কেটে কলম বানানো হয় আর সমুদ্রকে সাত গুণ বৃদ্ধি করে কালি বানানো হয় তবুও আল্লাহর অশেষ কথা লিখা শেষ হবে না। আল্লাহ পরাক্রমশালী; তাঁকে পরাভূতকারী কেউ নেই। তিনি তাঁর সৃষ্টি ও পরিচালনায় প্রজ্ঞাবান।
২৮. হে মানব সকল! তোমাদের সৃষ্টি আর হিসাব ও প্রতিদানের উদ্দেশ্যে পুনরুত্থান কেবল একটি প্রাণী সৃষ্টি ও তার পুনরুত্থানের মতই সহজ। আল্লাহ এমন সর্বশ্রোতা যাঁর নিকট কারো শব্দ অন্য কারো শব্দ শুনার পথে অন্তরায় হয় না। এমন সর্বদ্রষ্টা যার নিকট এক বস্তুর দর্শন অপর বস্তুর দর্শনের পথে অন্তরায় হয় না। এননিভাবে তাঁর নিকট এক প্রাণীর সৃষ্টি ও পুনরুত্থান অপর প্রাণীর সৃষ্টি ও পুনরুত্থানের পথে বাধা হয় না।
২৯. আপনি কি দেখেন না যে, আল্লাহ রাত্রিকে কমিয়ে আনেন দিনকে দীর্ঘ করার জন্যে আর দিনকে কমিয়ে আনেন রাত্রিকে দীর্ঘ করার জন্যে। তিনি সূর্য ও চন্দ্রের গতি নির্ধারণ করেছেন। ফলে তাদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ নির্ধারিত কক্ষ পথে সুনির্দিষ্ট সময়ের জন্যে প্রবাহিত হয়। আর তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ সে বিষয়ে অবগত। তাঁর নিকট তোমাদের কোন আমল গোপন থাকে না। ফলে তিনি তোমাদেরকে তার সঠিক ও পূর্ণ প্রতিদান দিবেন।
৩০. এহেন পরিচালনা ও নির্ধারণ সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহই একক সত্য। তিনি তাঁর সত্তায়, গুণে ও কাজে সত্য। পক্ষান্তরে মুশরিকরা আল্লাহর পরিবর্তে যার এবাদত করে তা বাতিল; তার কোন ভিত্তি নেই। বস্ততঃ আল্লাহ তাঁর সত্তা, প্রতিপত্তি ও সকল সৃষ্টির উপর ক্ষমতায় সমুন্নত। যাঁর উপরে অন্য কিছুই নেই; তিনিই সব কিছুর উপরে।
৩১. আপনি কি দেখেন নি যে, সমুদ্রে জাহাজগুলো চলে তাঁর অনুকম্পা ও পরিচালনায়। যাতে করে হে লোক সকল! তিনি তোমাদেরকে তাঁর ক্ষমতা ও অনুকম্পার উপর প্রমাণবহনকারী নিদর্শন দেখাতে পারেন। অবশ্যই এতে রয়েছে বিপদে দৃঢ়তার সহিত ধৈর্য ধারণকারী ও নি‘আমত লাভে শুকরিয়া আদায়কারীর জন্যে আল্লাহর ক্ষমতা ও অনুকম্পার অসংখ্য প্রমাণ।
৩২. যখন তাদেরকে সর্বদিক থেকে পাহাড় ও মেঘমালার ন্যায় ঢেউ ঘিরে ফেলে তখন তারা আল্লাহর উদ্দেশ্যে এবাদত ও দো‘আতে একনিষ্ঠ হয়ে এককভাবে তাঁকে ডাকে। অতঃপর যখন তিনি তাদের দো‘আ কবূল করে ডুবে যাওয়া থেকে রক্ষা করে স্থলভাগে পৌঁছিয়ে দেন তখন তাদের মধ্যে কেউ ঈমান ও কুফরির মাঝপথ বেছে নেয়। ফলে তার উপর অপরিহার্য পূর্ণ শুকরিয়া আদায় করে না। আর তাদের মধ্যে কেউ আল্লাহর নি‘আমত অস্বীকার করে। বস্তুতঃ মহা অকৃতজ্ঞ ছাড়া আমার নি‘আমত কেউ অস্বীকার করে না। যেমনটি করেছে ওই ব্যক্তি যে আল্লাহকে ওয়াদা দিয়েছিল যে, আল্লাহ যদি তাকে রক্ষা করেন তবে সে অবশ্যই শুকরগুজারদের অন্তর্ভুক্ত হবে। মূলতঃ যে আল্লাহর নি‘আমতের অস্বীকারকারী সে তার উপর অনুগ্রহ প্রদর্শনকারী প্রতিপালকের শুকরিয়া আদায় করে না।
৩৩. হে লোক সকল! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে তাঁর আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে ভয় করো। আর এমন দিনের শাস্তির ভয় করো যেদিন পিতা তার পুত্রের কোন উপকার করতে পারবে না। না পুত্র তার পিতার কোন উপকারে আসবে। অবশ্যই ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহর প্রতিদানের অঙ্গীকার চির সত্য। যা অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে। তাই তোমাদেরকে যেন দুনিয়ার জীবনের চাকচিক্য ও ভোগসামগ্রী এথেকে ধোঁকায় না ফেলে দেয়। এমনিভাবে আল্লাহর সহনশীলতা ও তাঁর শাস্তির বিলম্বের সুযোগে শয়তান যেন তোমারেকে বিপাকে ফেলে না দেয়।
৩৪. ক্বিায়াতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর নিকটেই। তাই তিনিই জানেন কখন তা সংঘটিত হবে। তিনি যখন ইচ্ছা করেন তখনই বৃষ্টি অবতীর্ণ হয়। তিনিই জানেন গর্ভে কী রয়েছে; ছেলে না মেয়ে, সুখী না দুঃখী। আগামি কাল কে কী কামাই করবে; ভাল না মন্দ তা কোন মানুষই জানেনা এবং সে এও জানে না যে, সে কোথায় মারা যাবে। বরং কেবল আল্লাহই এসবের খবর রাখেন। তাঁর নিকট এর কিছুই গোপন থাকে না।