ﯽ
ترجمة معاني سورة عبس
باللغة البنغالية من كتاب الترجمة البنغالية
.
من تأليف:
د. أبو بكر محمد زكريا
.
ﰡ
ﭑﭒ
ﰀ
তিনি ভ্ৰকুঞ্চিত করলেন এবং মুখ ফিরিয়ে নিলেন [১] ,
____________________
সূরা সম্পর্কিত তথ্যঃ
এ সূরাটি সাহাবী আবদুল্লাহ্ ইবনে উম্মে মাকতুম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এর সাথে বিশেষভাবে জড়িত। তাঁর মা উম্মে মাকতুম ছিলেন খাদীজা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার পিতা খুওয়াইলিদের সহোদর বোন। তিনি ছিলেন নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামের শ্যালক। বংশ মর্যাদার দিক দিয়ে সমাজের সাধারণ শ্রেণীভুক্ত নন বরং অভিজাত বংশীয় ছিলেন। আবদুল্লাহ্ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু অন্ধ হওয়ার কারণে জানতে পারেননি যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্যের সাথে আলোচনারত আছেন। তিনি মজলিসে প্রবেশ করেই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আওয়াজ দিতে শুরু করেন এবং বার বার আওয়াজ দেন। কোন কোন বর্ণনায় এসেছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কুরআন এর একটি আয়াতের পাঠ জিজ্ঞাসা করেন এবং সাথে সাথে জওয়াব দিতে পীড়াপীড়ি করেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন মক্কার কাফের নেতৃবর্গের সাথে আলোচনায় মশগুল ছিলেন। এই নেতৃবর্গ ছিলেন ওতবা ইবনে রবীয়া, আবু জাহল ইবনে হিশাম এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পিতৃব্য আব্বাস। তিনি তখনও মুসলিম হননি। এরূপ ক্ষেত্রে আবদুল্লাহ্ ইবনে উম্মে মাকতুম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এর এভাবে কথা বলা এবং মামুলী প্রশ্ন নিয়ে তাৎক্ষনিক জওয়াবের জন্য পীড়াপীড়ি করা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে বিরক্তিকর ঠেকে। এই বিরক্তির প্রধান কারণ ছিল এই যে, আবদুল্লাহ্ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু পাক্কা মুসলিম ছিলেন এবং সদা সবৰ্দা মজলিসে উপস্থিত থাকতেন। তিনি এই প্রশ্ন অন্য সময়ও রাখতে পারতেন। তাঁর জওয়াব বিলম্বিত করার মধ্যে কোন ধর্মীয় ক্ষতির আশংকা ছিল না। কিন্তু আল্লাহ্ তা'আলা নবীর এ বিরক্তি প্রকাশ পছন্দ করলেন না। তিনি আয়াত নাযিল করে তার প্রতিকার করেন। [দেখুন: তিরমিয়ী: ৩৩২৮, ৩৩৩১, মুয়াত্তা মালেক: ১/২০৩]
___________________
[১] عبس শব্দের অর্থ রুষ্টতা অবলম্বন করা এবং চোখে মুখে বিরক্তি প্ৰকাশ করা। تولى শব্দের অর্থ মুখ ফিরিয়ে নেয়া। [জালালাইন|
____________________
সূরা সম্পর্কিত তথ্যঃ
এ সূরাটি সাহাবী আবদুল্লাহ্ ইবনে উম্মে মাকতুম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এর সাথে বিশেষভাবে জড়িত। তাঁর মা উম্মে মাকতুম ছিলেন খাদীজা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহার পিতা খুওয়াইলিদের সহোদর বোন। তিনি ছিলেন নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামের শ্যালক। বংশ মর্যাদার দিক দিয়ে সমাজের সাধারণ শ্রেণীভুক্ত নন বরং অভিজাত বংশীয় ছিলেন। আবদুল্লাহ্ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু অন্ধ হওয়ার কারণে জানতে পারেননি যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অন্যের সাথে আলোচনারত আছেন। তিনি মজলিসে প্রবেশ করেই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আওয়াজ দিতে শুরু করেন এবং বার বার আওয়াজ দেন। কোন কোন বর্ণনায় এসেছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কুরআন এর একটি আয়াতের পাঠ জিজ্ঞাসা করেন এবং সাথে সাথে জওয়াব দিতে পীড়াপীড়ি করেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন মক্কার কাফের নেতৃবর্গের সাথে আলোচনায় মশগুল ছিলেন। এই নেতৃবর্গ ছিলেন ওতবা ইবনে রবীয়া, আবু জাহল ইবনে হিশাম এবং রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পিতৃব্য আব্বাস। তিনি তখনও মুসলিম হননি। এরূপ ক্ষেত্রে আবদুল্লাহ্ ইবনে উম্মে মাকতুম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এর এভাবে কথা বলা এবং মামুলী প্রশ্ন নিয়ে তাৎক্ষনিক জওয়াবের জন্য পীড়াপীড়ি করা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে বিরক্তিকর ঠেকে। এই বিরক্তির প্রধান কারণ ছিল এই যে, আবদুল্লাহ্ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু পাক্কা মুসলিম ছিলেন এবং সদা সবৰ্দা মজলিসে উপস্থিত থাকতেন। তিনি এই প্রশ্ন অন্য সময়ও রাখতে পারতেন। তাঁর জওয়াব বিলম্বিত করার মধ্যে কোন ধর্মীয় ক্ষতির আশংকা ছিল না। কিন্তু আল্লাহ্ তা'আলা নবীর এ বিরক্তি প্রকাশ পছন্দ করলেন না। তিনি আয়াত নাযিল করে তার প্রতিকার করেন। [দেখুন: তিরমিয়ী: ৩৩২৮, ৩৩৩১, মুয়াত্তা মালেক: ১/২০৩]
___________________
[১] عبس শব্দের অর্থ রুষ্টতা অবলম্বন করা এবং চোখে মুখে বিরক্তি প্ৰকাশ করা। تولى শব্দের অর্থ মুখ ফিরিয়ে নেয়া। [জালালাইন|
কারণ তাঁর কাছে অন্ধ লোকটি আসল।
আর কিসে আপনাকে জানাবে যে, --- সে হয়ত পরিশুদ্ধ হত,
অথবা উপদেশ গ্ৰহণ করত, ফলে সে উপদেশ তার উপকারে আসত [১]।
____________________
[১] অর্থাৎ আপনি কি জানেন এই সাহাবী যা জিজ্ঞেস করেছিল তা তাকে শিক্ষা দিলে সে তা দ্বারা পরিশুদ্ধ হতে পারত কিংবা কমপক্ষে আল্লাহ্ তা‘আলাকে স্মরণ করে উপকার লাভ করতে পারত। [দেখুন, মুয়াসসার; সা‘দী]
____________________
[১] অর্থাৎ আপনি কি জানেন এই সাহাবী যা জিজ্ঞেস করেছিল তা তাকে শিক্ষা দিলে সে তা দ্বারা পরিশুদ্ধ হতে পারত কিংবা কমপক্ষে আল্লাহ্ তা‘আলাকে স্মরণ করে উপকার লাভ করতে পারত। [দেখুন, মুয়াসসার; সা‘দী]
আর যে পরোয়া করে না,
আপনি তার প্রতি মনোযোগ দিয়েছেন।
অথচ সে নিজে পরিশুদ্ধ না হলে আপনার কোন দায়িত্ব নেই,
অপরদিকে যে আপনার কাছে ছুটে এলো,
ﭴﭵ
ﰈ
আর সে সশঙ্কচিত্ত,
আপনি তার থেকে উদাসীন হলেন;
কখনো নয়, এটা তো উপদেশ বাণী [১] ,
____________________
[১] অর্থাৎ এমনটি কখনো করবেন না। যে সব লোক আল্লাহ্কে ভুলে আছে এবং যারা নিজেদের দুনিয়াবী সহায়-সম্পদ ও প্রভাব-প্রতিপত্তির অহংকারে মত্ত হয়ে আছে, তাদেরকে অযথা গুরুত্ব দিবেন না। ইসলাম, অহি বা কুরআন এমন কিছু নয় যে, যে ব্যক্তি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকে তার সামনে নতজানু হয়ে তা পেশ করতে হবে। বরং সে সত্যের যতটা মুখাপেক্ষী নয় সত্যও তার ততটা মুখাপেক্ষী নয়। বরং তাদেরই ইসলামের মহত্তের সামনে নতজানু হতে হবে। [তাতিম্মাতু আদ্ওয়াউল বায়ান]
____________________
[১] অর্থাৎ এমনটি কখনো করবেন না। যে সব লোক আল্লাহ্কে ভুলে আছে এবং যারা নিজেদের দুনিয়াবী সহায়-সম্পদ ও প্রভাব-প্রতিপত্তির অহংকারে মত্ত হয়ে আছে, তাদেরকে অযথা গুরুত্ব দিবেন না। ইসলাম, অহি বা কুরআন এমন কিছু নয় যে, যে ব্যক্তি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকে তার সামনে নতজানু হয়ে তা পেশ করতে হবে। বরং সে সত্যের যতটা মুখাপেক্ষী নয় সত্যও তার ততটা মুখাপেক্ষী নয়। বরং তাদেরই ইসলামের মহত্তের সামনে নতজানু হতে হবে। [তাতিম্মাতু আদ্ওয়াউল বায়ান]
কাজেই যে ইচ্ছে করবে সে এটা স্মরণ রাখবে,
এটা আছে মর্যাদা সম্পন্ন লিপিসমূহে
ﮇﮈ
ﰍ
যা উন্নত, পবিত্ৰ [১] ,
____________________
[১] مكرمة অর্থ সম্মানিত, মর্যাদাসম্পন্ন। مرفوعة বলে এর মর্যাদা অনেক উচ্চ-তা বোঝানো হয়েছে। [ইবন কাসীর] আর مطهرة বলে বোঝানো হয়েছে হাসান বসরীর মতে, যাবতীয় নাপাক থেকে পবিত্র। সুদ্দী বলেন, এর অর্থ কাফেররা এটা পাওয়ার অধিকারী নয়। তাদের হাত থেকে পবিত্র। হাসান থেকে অপর বর্ণনায় বলা হয়েছে, এর অর্থ মুশরিকদের উপর নাযিল হওয়া থেকে পবিত্র। [কুরতুবী] ইবন কাসীর বলেন, এর অর্থ এটি বাড়তি-কমতি ও অপবিত্রতা থেকে পবিত্র ও মুক্ত।
____________________
[১] مكرمة অর্থ সম্মানিত, মর্যাদাসম্পন্ন। مرفوعة বলে এর মর্যাদা অনেক উচ্চ-তা বোঝানো হয়েছে। [ইবন কাসীর] আর مطهرة বলে বোঝানো হয়েছে হাসান বসরীর মতে, যাবতীয় নাপাক থেকে পবিত্র। সুদ্দী বলেন, এর অর্থ কাফেররা এটা পাওয়ার অধিকারী নয়। তাদের হাত থেকে পবিত্র। হাসান থেকে অপর বর্ণনায় বলা হয়েছে, এর অর্থ মুশরিকদের উপর নাযিল হওয়া থেকে পবিত্র। [কুরতুবী] ইবন কাসীর বলেন, এর অর্থ এটি বাড়তি-কমতি ও অপবিত্রতা থেকে পবিত্র ও মুক্ত।
ﮊﮋ
ﰎ
লেখক বা দূতদের হাতে [১]।
____________________
[১] سفرة শব্দটি سافر এর বহুবচন হতে পারে। তখন অর্থ হবে লিপিকার বা লেখক। আর যদি سفرة শব্দটি سفارة থেকে আসে, তখন এর অর্থ দূতগণ। এই শব্দ দ্বারা ফেরেশতা উদ্দেশ্য হতে পারে, আবার রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীদেরও উদ্দেশ্য হতে পারে। প্রথমটিই অধিক শুদ্ধ। সহীহ হাদীসে এ السَّفَرَةُ الكِرَامُ الْبَرَرَةُ এর তাফসীর ফেরেশতাদেরই উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ ‘কেরাআতে বিশেষজ্ঞ কুরআন পাঠক সম্মানিত নেককার দূতদের (ফেরেশতাদের) সাথে থাকবে আর যে ব্যক্তি বিশেষজ্ঞ নয় কিন্তু কষ্টে সৃষ্টি পড়ে সে দ্বিগুণ সওয়াব পাবে। [বুখারী: ৪৯৩৭, মুসলিম: ৭৯৮] [ইবন কাসীর]
____________________
[১] سفرة শব্দটি سافر এর বহুবচন হতে পারে। তখন অর্থ হবে লিপিকার বা লেখক। আর যদি سفرة শব্দটি سفارة থেকে আসে, তখন এর অর্থ দূতগণ। এই শব্দ দ্বারা ফেরেশতা উদ্দেশ্য হতে পারে, আবার রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাহাবীদেরও উদ্দেশ্য হতে পারে। প্রথমটিই অধিক শুদ্ধ। সহীহ হাদীসে এ السَّفَرَةُ الكِرَامُ الْبَرَرَةُ এর তাফসীর ফেরেশতাদেরই উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ ‘কেরাআতে বিশেষজ্ঞ কুরআন পাঠক সম্মানিত নেককার দূতদের (ফেরেশতাদের) সাথে থাকবে আর যে ব্যক্তি বিশেষজ্ঞ নয় কিন্তু কষ্টে সৃষ্টি পড়ে সে দ্বিগুণ সওয়াব পাবে। [বুখারী: ৪৯৩৭, মুসলিম: ৭৯৮] [ইবন কাসীর]
ﮍﮎ
ﰏ
(যারা) মহাসম্মানিত ও নেককার।
মানুষ ধ্বংস হোক! সে কত অকৃতজ্ঞ [১] !
____________________
[১] এর অর্থ, সে কত বড় সত্য-অস্বীকারকারী। তাছাড়া এ আয়াতের আর একটি অর্থ হতে পারে। অর্থাৎ “কোন জিনিসটি তাকে সত্য অস্বীকার করতে উদ্ধুদ্ধ করেছে?” [তাবারী]
____________________
[১] এর অর্থ, সে কত বড় সত্য-অস্বীকারকারী। তাছাড়া এ আয়াতের আর একটি অর্থ হতে পারে। অর্থাৎ “কোন জিনিসটি তাকে সত্য অস্বীকার করতে উদ্ধুদ্ধ করেছে?” [তাবারী]
তিনি তাকে কোন বস্তু থেকে সৃষ্টি করেছেন?
শুক্রবিন্দু থেকে, তিনি তাকে সৃষ্টি করেন, পরে তার পরিমিত বিকাশ সাধন করেন [১] ,
____________________
[১] قدّره অর্থাৎ সুপরিমিত করেছেন, তার গঠন-প্রকৃতি, আকার-আকৃতি সুপরিমিতভাবে সৃষ্টি করেছেন। قدّره শব্দের এরূপ অৰ্থও হতে পারে যে, মানুষ যখন মাতৃগর্ভে সৃষ্টি হতে থাকে তখন আল্লাহ্ তা‘আলা তার কাজ, বয়স, রিযিক, ভাগ্য ইত্যাদি তকদীর নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। তাছাড়া পূর্ব থেকেই প্রতিটি মানুষের জন্য নির্দিষ্ট করা আছে তার গায়ের রং কি হবে, সে কতটুকু উচুঁ হবে, তার দেহ কতটুকু কি পরিমাণ মোটা ও পরিপুষ্ট হবে। এত সব সত্ত্বেও সে তার রবের সাথে কুফরী করে। [দেখুন, কুরতুবী]
____________________
[১] قدّره অর্থাৎ সুপরিমিত করেছেন, তার গঠন-প্রকৃতি, আকার-আকৃতি সুপরিমিতভাবে সৃষ্টি করেছেন। قدّره শব্দের এরূপ অৰ্থও হতে পারে যে, মানুষ যখন মাতৃগর্ভে সৃষ্টি হতে থাকে তখন আল্লাহ্ তা‘আলা তার কাজ, বয়স, রিযিক, ভাগ্য ইত্যাদি তকদীর নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। তাছাড়া পূর্ব থেকেই প্রতিটি মানুষের জন্য নির্দিষ্ট করা আছে তার গায়ের রং কি হবে, সে কতটুকু উচুঁ হবে, তার দেহ কতটুকু কি পরিমাণ মোটা ও পরিপুষ্ট হবে। এত সব সত্ত্বেও সে তার রবের সাথে কুফরী করে। [দেখুন, কুরতুবী]
তারপর তার জন্য পথ সহজ করে দেন [১] ;
____________________
[১] অর্থাৎ আল্লাহ্ তা‘আলা স্বীয় ক্ষমতা-বলে মাতৃগর্ভে মানুষকে সৃষ্টি করেন। তারপর তিনিই তার অপার শক্তির মাধ্যমে মাতৃগৰ্ভ থেকে জীবিত ও পুর্ণাঙ্গ মানুষের বাইরে আসার পথ সহজ করে দেয়। ফলে দেহটি সহী-সালামতে বাইরে চলে আসে এবং মায়েরও এতে তেমন কোন দৈহিক ক্ষতি হয় না। এছাড়া আয়াতের আরেকটি অর্থ হচ্ছে, দুনিয়ায় তিনি তার জন্য নিজের জন্য ভালো বা মন্দ, কৃতজ্ঞতা বা অকৃতজ্ঞতা আনুগত্য বা অবাধ্যতার মধ্যে সে কোন পথ চায় তা তার সামনে খুলে রেখে দিয়েছেন এবং পথ তার জন্য সহজ করে দিয়েছেন। ফলে সে শুকরিয়া আদায় করে সৎপথ গ্রহণ করতে পারে, আবার কুফরী করে বিপথে যেতে পারে। [দেখুন, ইবন কাসীর]
____________________
[১] অর্থাৎ আল্লাহ্ তা‘আলা স্বীয় ক্ষমতা-বলে মাতৃগর্ভে মানুষকে সৃষ্টি করেন। তারপর তিনিই তার অপার শক্তির মাধ্যমে মাতৃগৰ্ভ থেকে জীবিত ও পুর্ণাঙ্গ মানুষের বাইরে আসার পথ সহজ করে দেয়। ফলে দেহটি সহী-সালামতে বাইরে চলে আসে এবং মায়েরও এতে তেমন কোন দৈহিক ক্ষতি হয় না। এছাড়া আয়াতের আরেকটি অর্থ হচ্ছে, দুনিয়ায় তিনি তার জন্য নিজের জন্য ভালো বা মন্দ, কৃতজ্ঞতা বা অকৃতজ্ঞতা আনুগত্য বা অবাধ্যতার মধ্যে সে কোন পথ চায় তা তার সামনে খুলে রেখে দিয়েছেন এবং পথ তার জন্য সহজ করে দিয়েছেন। ফলে সে শুকরিয়া আদায় করে সৎপথ গ্রহণ করতে পারে, আবার কুফরী করে বিপথে যেতে পারে। [দেখুন, ইবন কাসীর]
এরপর তার মৃত্যু ঘটান এবং তাকে কবরস্থ করেন।
এরপর যখন ইচ্ছে তিনি তাকে পুনর্জীবিত করবেন [১]।
____________________
[১] অর্থাৎ মৃত্যুর পর আল্লাহ্ তা‘আলাই মানুষকে পুনরুজ্জীবিত করবেন। একমাত্র তিনিই এগুলো করার ক্ষমতা রাখেন। তারপরও মানুষ তাঁকে অস্বীকার করে, তাঁর হক আদায় করে না। [সা‘দী] আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দুই ফুৎকারের মধ্যবর্তী সময় হবে চল্লিশ। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সাথীরা বলল, চল্লিশ দিন? আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, আমি এটা বলতে অস্বীকার করছি, তারা বলল, চল্লিশ বছর? তিনি বললেন, আমি এটা বলতেও অস্বীকার করছি। তারা বলল, তাহলে কি চল্লিশ মাস? তিনি বললেন, আমি এটাও বলতে অস্বীকার করছি। তবে মানুষের সবকিছু পঁচে যায় একমাত্র মেরুদণ্ডের নিমভাগের একটি ছোট্ট কোষ ব্যতীত। তার উপরই আবার সৃষ্টি জড়ো হবে।” [বুখারী: ৪৮১৪, মুসলিম: ২৯৫৫]
____________________
[১] অর্থাৎ মৃত্যুর পর আল্লাহ্ তা‘আলাই মানুষকে পুনরুজ্জীবিত করবেন। একমাত্র তিনিই এগুলো করার ক্ষমতা রাখেন। তারপরও মানুষ তাঁকে অস্বীকার করে, তাঁর হক আদায় করে না। [সা‘দী] আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, দুই ফুৎকারের মধ্যবর্তী সময় হবে চল্লিশ। আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সাথীরা বলল, চল্লিশ দিন? আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, আমি এটা বলতে অস্বীকার করছি, তারা বলল, চল্লিশ বছর? তিনি বললেন, আমি এটা বলতেও অস্বীকার করছি। তারা বলল, তাহলে কি চল্লিশ মাস? তিনি বললেন, আমি এটাও বলতে অস্বীকার করছি। তবে মানুষের সবকিছু পঁচে যায় একমাত্র মেরুদণ্ডের নিমভাগের একটি ছোট্ট কোষ ব্যতীত। তার উপরই আবার সৃষ্টি জড়ো হবে।” [বুখারী: ৪৮১৪, মুসলিম: ২৯৫৫]
কখনো নয়, তিনি তাকে যা আদেশ করেছেন, সে এখনো তা পূর্ণ করেনি।
অতঃপর মানুষ যেন তার খাদ্যের প্রতি লক্ষ্য করে [১] !
____________________
[১] মানবসৃষ্টির সূচনা উল্লেখ করার পর মানুষ যে খাদ্যের নেয়ামত ভোগ করে, এখানে সেগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ খাদ্য সম্পর্কে তার একবার চিন্তা করা প্রয়োজন – কিভাবে এই খাদ্য উৎপন্ন হয়। আল্লাহ্ যদি এর উপকরণগুলো সরবরাহ না করতেন তাহলে কি জমি থেকে এই খাদ্য উৎপন্ন করার ক্ষমতা মানুষের ছিল? এসব নেয়ামতসমূহ তিনি মানুষকে দিয়েছেন যাতে মানুষ কিয়ামতের প্রস্তুতির জন্য এর সাহায্যে আল্লাহ্র ইবাদত করে। [কুরতুবী]
____________________
[১] মানবসৃষ্টির সূচনা উল্লেখ করার পর মানুষ যে খাদ্যের নেয়ামত ভোগ করে, এখানে সেগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ খাদ্য সম্পর্কে তার একবার চিন্তা করা প্রয়োজন – কিভাবে এই খাদ্য উৎপন্ন হয়। আল্লাহ্ যদি এর উপকরণগুলো সরবরাহ না করতেন তাহলে কি জমি থেকে এই খাদ্য উৎপন্ন করার ক্ষমতা মানুষের ছিল? এসব নেয়ামতসমূহ তিনি মানুষকে দিয়েছেন যাতে মানুষ কিয়ামতের প্রস্তুতির জন্য এর সাহায্যে আল্লাহ্র ইবাদত করে। [কুরতুবী]
নিশ্চয় আমরা প্রচুর বারি বর্ষণ করি,
তারপর আমরা যমীনকে যথাযথভাবে বিদীর্ণ করি;
অতঃপর তাতে আমরা উৎপন্ন করি শস্য;
ﯦﯧ
ﰛ
আঙ্গুর, শাক-সব্জি,
ﯩﯪ
ﰜ
যায়তূন, খেজুরগাছ,
ﯬﯭ
ﰝ
অনেক গাছবিশিষ্ট উদ্যান,
ﯯﯰ
ﰞ
ফল এবং গবাদি খাদ্য [১] ,
____________________
[১] أبّ শব্দটির উপরোক্ত অর্থ ইবনে আব্বাস ও উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম থেকে সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। [সহীহ ইবনে খুযাইমাহ: ২১৭২]
____________________
[১] أبّ শব্দটির উপরোক্ত অর্থ ইবনে আব্বাস ও উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম থেকে সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। [সহীহ ইবনে খুযাইমাহ: ২১৭২]
এগুলো তোমাদের ও তোমাদের চতুস্পদ জন্তুদের ভোগের জন্য [১]।
____________________
[১] অর্থাৎ কেবল তোমাদের জন্যই নয়, তোমাদের যেসব গবাদি-গৃহপালিত পশু রয়েছে, তাদের জন্যও। এসব নেয়ামতের দিকে দৃষ্টিপাত করলে মহান আল্লাহ্র ইবাদত, তার প্রতি শুকরিয়া আদায় করা ও তার নির্দেশাবলি মেনে চলার প্রয়োজনীয়তা ফুটে ওঠে।
____________________
[১] অর্থাৎ কেবল তোমাদের জন্যই নয়, তোমাদের যেসব গবাদি-গৃহপালিত পশু রয়েছে, তাদের জন্যও। এসব নেয়ামতের দিকে দৃষ্টিপাত করলে মহান আল্লাহ্র ইবাদত, তার প্রতি শুকরিয়া আদায় করা ও তার নির্দেশাবলি মেনে চলার প্রয়োজনীয়তা ফুটে ওঠে।
অতঃপর যখন তীক্ষ্ন আওয়াজ আসবে [১] ,
____________________
[১] আয়াতে বর্ণিত الصاخة শব্দটির মূল অর্থ হলো, ‘এমন কঠোর ডাক যার ফলে মানুষ শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলে।’ এখানে কিয়ামতের দ্বিতীয় শিংগাধ্বনির কথা বলা হয়েছে। যা পুনরুত্থানের শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া বোঝায়। এই বিকট আওয়ায বুলন্দ হবার সাথে সাথেই মরা মানুষেরা জীবিত হয়ে উঠবে এবং কেয়ামতের মাঠে উপস্থিত হবে। [মুয়াসসার, জালালাইন]
____________________
[১] আয়াতে বর্ণিত الصاخة শব্দটির মূল অর্থ হলো, ‘এমন কঠোর ডাক যার ফলে মানুষ শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলে।’ এখানে কিয়ামতের দ্বিতীয় শিংগাধ্বনির কথা বলা হয়েছে। যা পুনরুত্থানের শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া বোঝায়। এই বিকট আওয়ায বুলন্দ হবার সাথে সাথেই মরা মানুষেরা জীবিত হয়ে উঠবে এবং কেয়ামতের মাঠে উপস্থিত হবে। [মুয়াসসার, জালালাইন]
সেদিন মানুষ পালিয়ে যাবে তার ভাইয়ের কাছ থেকে,
ﰀﰁ
ﰢ
এবং তার মাতা, তার পিতা,
ﰃﰄ
ﰣ
তার পত্নী ও তার সন্তান থেকে [১] ,
____________________
[১] এখানে হাশরের ময়দানে সমাবেশের দিন বোঝানো হয়েছে, সেদিন প্রত্যেক মানুষ আপন চিন্তায় বিভোর হবে। সেদিন মানুষ তার অতি-নিকটাত্মীয়কে দেখলেও মুখ লুকাবে এবং পালিয়ে বেড়াবে। [ইবন কাসীর] প্ৰায় এই একই ধরনের বিষয়বস্তু বর্ণিত হয়েছে সূরা মা‘আরিজের ১০ থেকে ১৪ পর্যন্ত আয়াতে।
____________________
[১] এখানে হাশরের ময়দানে সমাবেশের দিন বোঝানো হয়েছে, সেদিন প্রত্যেক মানুষ আপন চিন্তায় বিভোর হবে। সেদিন মানুষ তার অতি-নিকটাত্মীয়কে দেখলেও মুখ লুকাবে এবং পালিয়ে বেড়াবে। [ইবন কাসীর] প্ৰায় এই একই ধরনের বিষয়বস্তু বর্ণিত হয়েছে সূরা মা‘আরিজের ১০ থেকে ১৪ পর্যন্ত আয়াতে।
সেদিন তাদের প্রত্যেকের হবে এমন গুরুতর অবস্থা যা তাকে সম্পূর্ণরূপে ব্যস্ত রাখবে [১]।
____________________
[১] প্ৰত্যেক মানুষ তার ভ্রাতার কাছ থেকে এবং পিতা মাতা স্ত্রী এবং সন্তানদের কাছ থেকে সেদিন মুখ লুকিয়ে ফিরবে। দুনিয়াতে পারস্পরিক সাহায্য ও সহযোগিতা ভ্রাতাদের মধ্যে হয়। এর চেয়ে বেশী পিতা-মাতাকে সাহায্য করার চিন্তা করা হয় এবং স্বভাবগত কারণে এর চেয়েও বেশী স্ত্রী এবং সন্তানদের সাথে সম্পর্ক স্থাপিত হয়। আয়াতে নীচ থেকে উপরের সম্পর্ক যথাক্রমে উল্লেখ করা হয়েছে। [কাতাদা: দেখুন, ইবন কাসীর] হাদীসে বলা হয়েছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষ একেবারেই উলংগ হয়ে উঠবে। একথা শুনে তার পবিত্র স্ত্রীদের মধ্য থেকে কোন একজন ঘাবড়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমাদের লজ্জাস্থান কি সেদিন সবার সামনে খোলা থাকবে? জবাবে রাসূলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই আয়াতটি তেলাওয়াত করে বলেন, সেদিন অন্যের দিকে তাকাবার মতো হুঁশ ও চেতনা কারো থাকবে না। [নাসাঈ: ২০৮৩, তিরমিয়ী: ৩৩৩২, ইবনে মাজাহঃ ৪২৭৬, মুসনাদে আহমাদ: ৬/৮৯]।
____________________
[১] প্ৰত্যেক মানুষ তার ভ্রাতার কাছ থেকে এবং পিতা মাতা স্ত্রী এবং সন্তানদের কাছ থেকে সেদিন মুখ লুকিয়ে ফিরবে। দুনিয়াতে পারস্পরিক সাহায্য ও সহযোগিতা ভ্রাতাদের মধ্যে হয়। এর চেয়ে বেশী পিতা-মাতাকে সাহায্য করার চিন্তা করা হয় এবং স্বভাবগত কারণে এর চেয়েও বেশী স্ত্রী এবং সন্তানদের সাথে সম্পর্ক স্থাপিত হয়। আয়াতে নীচ থেকে উপরের সম্পর্ক যথাক্রমে উল্লেখ করা হয়েছে। [কাতাদা: দেখুন, ইবন কাসীর] হাদীসে বলা হয়েছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষ একেবারেই উলংগ হয়ে উঠবে। একথা শুনে তার পবিত্র স্ত্রীদের মধ্য থেকে কোন একজন ঘাবড়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমাদের লজ্জাস্থান কি সেদিন সবার সামনে খোলা থাকবে? জবাবে রাসূলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই আয়াতটি তেলাওয়াত করে বলেন, সেদিন অন্যের দিকে তাকাবার মতো হুঁশ ও চেতনা কারো থাকবে না। [নাসাঈ: ২০৮৩, তিরমিয়ী: ৩৩৩২, ইবনে মাজাহঃ ৪২৭৬, মুসনাদে আহমাদ: ৬/৮৯]।
অনেক চেহারা সেদিন হবে উজ্জ্বল,
ﰑﰒ
ﰦ
সহাস্য ও প্রফুল্ল,
আর অনেক চেহারা সেদিন হবে ধূলিধূসর
ﭑﭒ
ﰨ
সেগুলোকে আচ্ছন্ন করবে কালিমা।
এরাই কাফির ও পাপাচারী।