ﯪ
                    surah.translation
            .
            
                            
            
    ﰡ
১. আসমান ও যমীনের সব কিছু আল্লাহকে এমন সব বস্তু থেকে পবিত্র ঘোষণা করেছে যা তাঁর সাথে মানানসই নয়। তিনি পরাক্রমশালী; যাঁকে পরাস্তকারী কেউ নেই। তিনি তাঁর সৃষ্টি, ফায়সালা ও বিধানে প্রজ্ঞাময়।
                                                                        ২. হে মু’মিন সম্প্রদায়! তোমরা কীভাকে কোন কাজ বাস্তবে না করে বলো করেছি? যেমন তোমাদের কেউ বলে, আমি তরবারি দিয়ে যুদ্ধ করেছি বা আঘাত করেছি; অথচ সে না তরবারি দিয়ে যুদ্ধ করেছে, না আঘাত করেছে।
                                                                        ৩. এ ঘৃণিত কাজ আল্লাহর নিকট বড় আকার ধারণ করেছে। আর তা হলো তোমরা যা করো না তা বলো। তাই একজন মু’মিনের উচিৎ হলো, সে যেন আল্লাহর সাথে সত্যবাদিতার পরিচয় দেয়। তথা তার কাজ যেন তার কথাকে সত্যায়ন করে।
                                                                        ৪. আল্লাহ ওই সব মু’মিনকে ভালোবাসেন যারা এমনভাবে পাশাপাশি লেগে লেগে দাঁড়িয়ে কাতারবন্দী হয়ে তাঁর সন্তুষ্টি কামনান্তে তাঁর পথে যুদ্ধ করে যেন তারা সিসা ঢালা প্রাচীর। যা পরস্পর মিলিত হয়ে থাকে।
                                                                        ৫. হে রাসূল! আপনি সে সময়ের কথা স্মরণ করুন যখন মূসা (আলাইহিস-সালাম) তাঁর জাতিকে বললেন: হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আমার নির্দেশের বিরোধিতা করে আমাকে কেন কষ্ট দাও। অথচ তোমরা জানো যে, আমি তোমাদের প্রতি প্রেরিত আল্লাহর রাসূল?! তাই তারা যখন সত্য থেকে সরে পড়লো তখন আমি তাদের অন্তরকে সত্য ও সরল পথ থেকে সরিয়ে দিলাম। বস্তুতঃ আল্লাহ তাঁর আনুগত্য থেকে বহিস্কৃত জাতিকে সত্য পথ প্রদর্শন করেন না।
                                                                        ৬. হে রাসূল! আপনি সে সময়ের কথা স্মরণ করুন যখন মারইয়াম তনয় ঈসা (আলাইহিস-সালাম) বললেন: হে বনী ইসরাইল! আমি তোমাদের প্রতি প্রেরিত আল্লাহর রাসূল। তিনি আমাকে তোমাদের প্রতি প্রেরণ করেছেন আমার পূর্বে অবতীর্ণ তাওরাতকে সত্যায়িত করতে। তাই আমি কোন নতুন নবী নই। তেমনিভাবে তিনি আমাকে আমার পরে আগত একজন রাসূলের সুসংবাদদাতা হিসাবে প্রেরণ করেছেন। যাঁর নাম হবে আহমদ। অতঃপর যখন তাদের নিকট ঈসা (আলাইহিস-সালাম) আগমন করলেন তাঁর সত্যতার উপর প্রমাণ বহনকারী সুস্পষ্ট প্রমাণাদী সহ তখন তারা বললো: ইনি জাদুকর। আমরা আদৗ তাঁর অনুসরণ করতে পারি না ।
                                                                        ৭. সে ব্যক্তি অপেক্ষা বড় জালিম আর কেউ নেই যে আল্লাহর উপর মিথ্যা রটিয়ে অন্য মাবূদসমূহকে তাঁর শরীক বানিয়ে তাদের ইবাদাত করে। অথচ তাকে আল্লাহর জন্য খাঁটি তাওহীদের দ্বীন ইসলামের দিকে আহŸান করা হচ্ছে। বস্তুতঃ আল্লাহ শিরক ও পাপাচারের মাধ্যমে নিজেদের উপর জুলমকারীদেরকে হেদায়ত ও সঠিক পথের দিশা দেন না।
                                                                        ৮. এ সব মিথ্যারোপকারী চায় আল্লাহর আলোকে তাদের মুখ নিঃসৃত সত্যকে বিভৎসকারী বাজে কথা দিয়ে নিভিয়ে দিতে। তবে আল্লাহ এদের অনিহা সত্তে¡ও তাঁর দ্বীনকে প্রাচ্য ও প্রতীচ্যে প্রকাশ ও বিজয় প্রদানের মাধ্যমে তাঁর জ্যোতিকে পূর্ণতা প্রদানকারী।
                                                                        ৯. তিনিই সেই আল্লাহ যিনি স্বীয় রাসূল মোহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)কে ইসলাম ধর্ম দিয়ে প্রেরণ করেছেন। যা কল্যাণের প্রতি হিদায়েত ও দিক নির্দেশনাকারী এবং উপকারী জ্ঞান ও নেক আমলের ধর্ম। যেন তিনি ওই সব মুশরিকদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সেটিকে সকল ধর্মের উপর বিজয় দান করেন যারা যমীনে তাঁর প্রতাপ চায় না।
                                                                        ১০. হে মুমিন সম্প্রদায়! তোমরা যারা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছো এবং তাঁর প্রবর্তিত বিধান অনুযায়ী আমল করে থাকো আমি কি তোমাদেরকে এমন এক লাভজনক বাণিজ্যের সন্ধান দিবো না যা তোমাদেরকে কষ্টদায়ক শাস্তি থেকে রেহাই দিবে?
                                                                        ১১. এ লাভজনক বাণিজ্য হলো এই যে, তোমরা আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের উপর ঈমান আনয়ন করবে এবং তাঁর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তাঁর পথে তোমাদের জান-মাল ব্যয় করবে। উপরোক্ত আমল তোমাদের জন্য অনেক উত্তম যদি তোমরা জানতে। তাই এর প্রতি তোমরা তরান্বিত হও।
                                                                        ১২. এ বাণিজ্যের লাভ হলো এই যে, আল্লাহ তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দিবেন এবং তোমাদেরকে এমন সব জান্নাতে প্রবিষ্ট করবেন যেগুলোর বৃক্ষরাজি ও অট্টালিকাসমূহের তলদেশ দিয়ে নদী-নালা প্রবাহিত। আর এমন সব আবাসনে প্রবিষ্ট করবেন যেগুলো স্থায়ী বসবাসের স্থান। সেখান থেকে প্রস্থান করার কোন প্রয়োজন নেই। বস্তুতঃ উপরোক্ত প্রতিদান হলো এমন সাফল্য যার সাথে কোন সাফল্যেরই তুলনা হয় না।
                                                                        ১৩. উক্ত বাণিজ্যের আরেকটি উপকারিতা হলো ইহকালীন; যেটি তোমরা পছন্দ করো। আর তা হলো, তিনি তোমাদেরকে নিজেদের শত্রæর বিরুদ্ধে সাহায্য করবেন। আর নিকটতম বিজয়; যা আল্লাহ তোমাদেরকে দান করবেন তা হলো মক্কা বিজয় ইত্যাদি। হে রাসূল! আপনি মুমিনদেরকে তাদের জন্য ইহকালের বিজয় এবং পরকালে জান্নাত লাভে ধন্য হওয়ার আনন্দদায়ক সুসংবাদ প্রদান করুন।
                                                                        ১৪. হে মুমিন সম্প্রদায়! তোমরা যারা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছো এবং তাঁর প্রবর্তিত বিধান অনুযায়ী আমল করে থাকো তোমরা রাসূল আনিত আল্লাহর দ্বীনকে সাহায্য করার মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্যকারী হয়ে যাও। যেমননিভাবে হাওয়ারীরা ঈসা (আলাইহিস-সালামের) এর আহŸানে সাড়া দিয়ে তাঁর সাহায্যার্থে এগিয়ে এসেছিলো। যখন তিনি এই বলে ডাক দিয়েছিলেন যে, আল্লাহর প্রতি আমার সাহায্যকারী কে আছো? তখন তারা ত্বরিত এ বলে উত্তর দিয়েছিলো যে, আমরা আল্লাহর সাহায্যকারী। এতে করে বনী ইসরাইলের এক পক্ষ ঈসা (আলাইহিস-সালাম) এর উপর ঈমান আনলো এবং অপর পক্ষ কুফরী করলো। তাই আমি ঈসা (আলাইহিস-সালাম) এর উপর ঈমান আনয়নকারীদেরকে কাফিরদের উপর সাহায্য করলাম। ফলে তারা ওদের উপর বিজয়ী হলো।