ﯯ
                    surah.translation
            .
            
                            
            
    ﰡ
১. হে রাসূল! আপনি কেন নিজের জন্য আল্লাহ কর্তৃক হালালকৃত বস্তু তথা মারিয়াকে দাসী হিসাবে ব্যবহার করা হারাম করে নিয়েছেন? এতে করে আপনি নিজের স্ত্রীদের সন্তুষ্টি কামনা করছেন। যখন তারা এর ব্যাপারে ঈর্ষান্বিতা হলো। বস্তুতঃ আল্লাহ আপনার প্রতি ক্ষমাশীল ও দয়াশীল।
                                                                        ২. আল্লাহ কাফফারা প্রদান সাপেক্ষে আপনাদের জন্য শপথ ভঙ্গ করা বৈধ করেছেন। যদি আপনারা তদপেক্ষা ভালো কিছু পেয়ে যান কিংবা তা ভঙ্গ করে থাকেন। বস্তুতঃ আল্লাহ আপনাদের সাহায্যকারী। তিনি আপনাদের অবস্থা ও আপনাদের জন্য যা কিছু প্রযোজ্য সে সম্পর্কে পরিজ্ঞাত। তিনি তাঁর বিধান রচনা ও ফায়সালায় প্রজ্ঞাবান।
                                                                        ৩. আপনি তখনকার কথা স্মরণ করুন যখন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শুধু হাফসাকে তাঁর স্ত্রী মারিয়ার নিকটবর্তী না হওয়ার সংবাদ দিলেন। এ দিকে হাফসা যখন সে ব্যাপারে আয়শাকে সংবাদ দিলো এবং আল্লাহ তদীয় নবীকে তাঁর গোপন সংবাদ ফাঁস হওয়ার কথা জ্ঞাত করলেন তখন তিনি হাফসাকে দোষারোপ করলেন। তিনি তার নিকট ওর দ্বারা প্রকাশিত কিছু কথা উল্লেখ করলেন আর কিছু কথা থেকে চুপ থাকলেন। তখন সে জিজ্ঞাসা করলো, আপনাকে এ ব্যাপারে কে সংবাদ দিয়েছে? তিনি বললেন, আমাকে সর্বজ্ঞ ও সর্ব প্রকার গোপন সংবাদ সম্পর্কে সবজান্তাই সংবাদ দিয়েছেন।
                                                                        ৪. তোমাদের উভয়ের দায়িত্ব হলো, তোমরা তাওবা করবে। কেননা, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যা অপছন্দ করতেন তথা তাঁর দাসী থেকে দূরে থাকা ও তাকে তাঁর উপর হারাম করে নেয়া এ ব্যাপারে তোমরা অনুরাগী হয়ে উঠেছো। যদি তোমরা তাঁকে এ ব্যাপারে ক্ষেপিয়ে তোলার কাজে অটল থাকো তাহলে জেনে রাখো, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর বন্ধু ও সাহায্যকারী। তেমনিভাবে জিবরীল এবং মুমিনদের মধ্যকার ভালো ব্যক্তিরাও তাঁর বন্ধু ও সাহায্যকারী। এ দিকে আল্লাহর সাহায্যের পর ফিরিশতারাও তাঁকে কষ্ট দেয়া লোকদের বিরুদ্ধে তাঁর সাহায্যকারী ও সহযোগী।
                                                                        ৫. আশা করা যায়, আল্লাহর নবী যদি তাঁর স্ত্রীদেরকে তালাক দিয়ে দেন তাহলে তিনি তাঁর জন্য তাদের পরিবর্তে তাদের অপেক্ষা আরো উত্তম স্ত্রীদের ব্যবস্থা করবেন। যারা তাঁর কথার আনুগত্যকারিণী, আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের উপর বিশ্বাসীনী, আল্লাহর আনুগত্যশীলা, নিজেদের পাপসমূহ থেকে তাওবাকারিণী, রবের ইবাদাতকারিণী, রোযাব্রত পালনকারিণী বিধবা ও এমন কুমারী হবে যাদের সাথে অন্য কেউ এখনো মিলন করে নি। বস্তুতঃ তিনি তাদেরকে তালাক দেন নি।
                                                                        ৬. হে মু’মিন সম্প্রদায়! তোমরা যারা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছো এবং তাঁর বিধান অনুযায়ী আমল করে থাকো! তোমরা নিজেদেরকে ও নিজেদের পরিজনদেরকে জাহান্নামের কঠিন আগুন থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থা করো। যার ইন্ধন হবে মানুষ আর পাথর। এ আগুনের দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন এমন ফিরিশতাগণ যাঁরা তাতে প্রবেশকারীদের ব্যাপারে রূঢ় ও কঠোর হবেন। আল্লাহ তাঁদেরকে কোন বিষয়ে নির্দেশ প্রদান করলে তাঁরা তাঁর নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করেন না। বরং তিনি যে ব্যাপারে নির্দেশ প্রদান করেন তাঁরা তা সাথে সাথেই পালন করেন।
                                                                        ৭. কিয়ামত দিবসে কাফিরদেরকে বলা হবে, হে কাফিররা! আজকের দিন তোমরা যে সব কুফরী ও পাপাচারে লিপ্ত ছিলে তা থেকে ওজর পেশ করো না। কেননা, আদৗ তোমাদের কোন আপত্তি গ্রহণ করা হবে না। বরং আজ শুধু তোমাদেরকে দুনিয়াতে কৃত তোমাদের কর্মকাÐ তথা আল্লাহর সাথে কুফরী ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি মিথ্যারোপের প্রতিদান দেয়া হবে।
                                                                        ৮. হে মু’মিন সম্প্রদায়! তোমরা যারা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছো এবং তাঁর বিধান অনুযায়ী আমল করে থাকো! তোমরা নিজেদের পাপসমূহ থেকে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর নিকট তাওবা করো। আশা করা যায়, তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন এবং এমন সব উদ্যানে প্রবিষ্ট করবেন যেগুলোর অট্টালিকার তলদেশ দিয়ে কিয়ামত দিবসে নদী-নালা প্রবাহিত হবে। যে দিন আল্লাহ তাঁর নবী ও মুমিনদেরকে জাহান্নামে প্রবিষ্ট করার মাধ্যমে তাঁদেরকে অপমান করবেন না। পুলসিরাতে তাঁদের সামনে ও ডানে নিজেদের জ্যোতি দৌড়াতে থাকবে। তাঁরা বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদের জ্যোতিগুলোকে পরিপূর্ণতা দিন। যাতে করে আমরা সেগুলোর আলোকে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি। ফলে আমরা যেন ওই সব মুনাফিকের মতো না হই যাদের জ্যোতি পুলসিরাতের উপর নিভে যাবে। আর আপনি আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাবান। অতএব, আপনি আমাদের জ্যোতি পরিপূর্ণ করতে ও আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করতে অপারগ নন।
                                                                        ৯. হে রাসূল! আপনি কাফিরদের সাথে তরবারি দিয়ে এবং মুনাফিকদের সাথে মুখ দিয়ে ও দÐবিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে যুদ্ধ করুন। আর তাদের সাথে কঠোরতা অবলম্বন করুন। যাতে করে তারা আপনাকে ভয় পায়। বস্তুতঃ কিয়ামত দিবসে তাদের শেষ ঠিকানা হবে জাহান্নাম। কতোই না নিকৃষ্ট হবে তাদের প্রত্যাবর্তনের ঠিকানা।
                                                                        ১০. আল্লাহ তাঁর সাথে ও তদীয় রাসূলের সাথে কুফরীকারীদের দৃষ্টান্ত পেশ করেছেন এভাবে যে, মুমিনদের সাথে তাদের সম্পর্ক কোন অবস্থাতেই উপকারে আসবে না। যেমন, আল্লাহর দু’জন নবী নূহ ও লুত (আলাইহিমাস-সালাম) এর স্ত্রীরা। তারা উভয় দু’জন সৎ বান্দার স্ত্রী ছিলো। তারা উভয় আল্লাহর পথ থেকে বারণ করা ও তাদের সম্প্রদায়ের লোকজনকে কুফরীর উপর সাহায্য প্রদানের মাধ্যমে নিজেদের স্বামীর সাথে খিয়ানত করে। ফলে এ দু’জন সৎ বান্দার স্ত্রী হওয়া তাদের কোন উপকারে আসে নি। বরং তাদেরকে বলা হবে, তোমরা কাফির ও ফাসিকদের সাথে জাহান্নামে প্রবেশ করো।
                                                                        ১১. আল্লাহ তাঁর উপর ও তদীয় রাসূলের উপর ঈমান আনয়নকারীদের দৃষ্টান্ত এভাবে পেশ করেছেন যে, কাফিরদের সাথে তাদের সম্পর্ক কোন ক্ষতি সাধন করতে পারবে না। আর না তাদের উপর কোনরূপ প্রভাব ফেলবে। যতক্ষণ তারা হকের উপর অটল থাকবে। যেমন, ফিরআউনের স্ত্রীর অবস্থা। যে বলেছিলো, হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমার উদ্দেশ্যে আপনার নিকট জান্নাতে একটি ঘর তৈরী করুন। আপনি আমাকে ফিরআউনের দাপট, প্রতাপ ও তার মন্দ আমল থেকে মুক্ত করুন। আপনি আমাকে অপরাধ ও জুলুমে তার আনুসরণ করার মাধ্যমে নিজেদের নফসের উপর অবিচারকারীদের থেকে নিরাপদে রাখুন।
                                                                        ১২. আল্লাহ তাঁর উপর ও তদীয় রাসূলের উপর ঈমান আনয়নকারীদের উদাহরণ পেশ করেছেন ইমরান তনয়া মারইয়ামের অবস্থার বর্ণনা দিয়ে। যে নিজ গুপ্তাঙ্গকে ব্যভিচার থেকে হিফাজত করে। ফলে আল্লাহ জিবরীলকে তাতে ফুৎকারের নির্দেশ দিলেন। তখন তিনি আল্লাহর কুদরতে ঈসা ইবনু মারইয়ামকে পিতা ব্যতিরেকেই গর্ভে ধারণ করেন। তিনি আল্লাহর বিধি-বিধান ও তাঁর রাসূলগণের উপর অবতীর্ণ তাঁর কিতাব সমূহকে সত্য বলে বিশ্বাস করেন। উপরন্তু তিনি আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে তাঁর অনুগত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত হন।