ترجمة سورة الطلاق

الترجمة البنغالية للمختصر في تفسير القرآن الكريم
ترجمة معاني سورة الطلاق باللغة البنغالية من كتاب الترجمة البنغالية للمختصر في تفسير القرآن الكريم .

১. হে নবী! যখন আপনি কিংবা আপনার উম্মতের কেউ নিজ স্ত্রীকে তালাক দিতে চায় তখন যেন সে তার প্রথম ইদ্দত তথা এমন পবিত্রতার সময় তালাক দেয় যাতে তাদের মিলন হয় নি। আর তোমরা ইদ্দতের হিসেব রাখো। যাতে তোমরা নিজেদের স্ত্রীদেরকে ফেরত নিতে চাইলে তা করতে পারো এবং তোমরা আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে নিজেদের প্রতিপালককে ভয় করো। তোমরা তালাকপ্রাপ্তাদেরকে নিজেদের আবাসন থেকে বের করে দিয়ো না। আর না তারা ইদ্দত পরিপূর্ণ হওয়ার পূর্বেই সেখান থেকে বের হবে। তবে হ্যাঁ, যদি তারা স্পষ্ট অশ্লীল কাজ যেমন ব্যভিচার করে বসে। এ সব হলো আল্লাহ কর্তৃক বান্দার জন্য নির্ধারিত সীমারেখা। যে ব্যক্তি এগুলো অতিক্রম করবে সে স্বীয় রবের অবাধ্যতার কারণে নিজেকে ধ্বংসের মধ্যে নিমজ্জিত করে নিজের উপর অবিচার করবে। হে তালাকদাতা! তুমি জানো না, হতে পারে পরবর্তীতে আল্লাহ উক্ত স্বামীর অন্তরে আগ্রহ সৃষ্টি করে দিতে পারেন। ফলে আপন স্ত্রীকে সে ফেরত নিবে।
২. যখন তাদের ইদ্দত পরিপূর্ণ হওয়ার সময় নিকটবর্তী হয়ে আসে তখন আগ্রহ ও সুন্দর আচরণ দ্বারা তাদেরকে ফেরত নাও। নচেৎ তাদের ইদ্দত পরিপূর্ণ হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে ফেরত না নিয়ে রেখে দাও। ফলে তারা নিজেদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে এবং ইদ্দত শেষে তাদের অধিকার বুঝিয়ে দাও। যখন তোমরা ফেরত নিতে চাও কিংবা বিচ্ছেদ ঘটাতে চাও তখন বিবাদ ঠেকাতে এর উপর দু’জন সাক্ষী রাখো। হে সাক্ষ্যদাতারা! তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনান্তে সাক্ষ্য প্রদান করো। উপরোক্ত বিধান দ্বারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসীদেরকে উপদেশ প্রদান করা হবে। কেননা, কেবল সেই উপদেশ দ্বারা উপকৃত হয়ে থাকে। বস্তুতঃ যে ব্যক্তি আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে আল্লাহকে ভয় করে তিনি তার উদ্দেশ্যে সকল সংকীর্ণতা ও সমস্যার সমাধান বের করে দেন।
৩. উপরন্তু তিনি তার জন্য অচিন্তনীয় পন্থায় জীবিকার ব্যবস্থা করেন। বস্তুতঃ যে ব্যক্তি নিজ কার্যাবলীর ব্যাপারে আল্লাহর উপর ভরসা রাখে তিনি তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। অবশ্যই আল্লাহ আপন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নকারী। তাকে কোন বস্তু অপারগ করতে পারে না। আর না তাঁর থেকে কোন বস্তু বাদ পড়তে পারে। তবে আল্লাহ প্রত্যেকটি বস্তুর জন্য নির্ধারিত পরিমাণ রেখেছেন যে পর্যন্ত তা ক্ষান্ত হয়। তাই সুখের কিছু পরিমাণ রয়েছে যেমন দুঃখেরও পরিমাণ রয়েছে। মানুষের মধ্যে উভয়টির কোনটিই স্থায়ী হয় না।
৪. যে সব তালাকপ্রাপ্তারা বয়সের কারণে মাসিক থেকে নিরাশ হয়েছে তাদের ইদ্দতের ব্যাপারে যদি তোমরা সন্দিহান হও তাহলে তাদের মেয়াদ তিন মাস বলে গণ্য হবে। তেমনিভাবে যারা ছোট থাকার ফলে মাসিকের বয়সে উপনীত হয় নি তাদের ইদ্দতও তিন মাস। আর গর্ভবতীদের তালাক কিংবা স্বামীর মরণোত্তর ইদ্দত হলো সন্তান প্রসব। বস্তুতঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে তাঁকে ভয় করে তিনি তার সকল বিষয় ও সমস্যা সহজ করে দেন।
৫. হে মু’মিনগণ! উপরোক্ত তালাক, ফেরত নেয়া ও ইদ্দত সম্পর্কে উল্লিখিত বিধানসমূহ হলো তোমাদের উদ্দেশ্যে অবতীর্ণ আল্লাহর বিধান। যাতে করে তোমরা এর উপর আমল করতে পারো। বস্তুতঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে তাঁকে ভয় করে তিনি তার কৃত পাপসমূহ মোচন করেন এবং পরকালে তাকে মহা প্রতিদান দেন। আর তা হলো জান্নাতে প্রবেশ এবং অফুরন্ত নিয়ামত হাসিল করা।
৬. হে স্বামীরা! তোমরা তাদেরকে সাধ্যানুযায়ী নিজেদের সুবিধা মতো আবাসে থাকতে দাও। আল্লাহ তোমাদের উপর এতদপেক্ষা বেশী কিছু আরোপ করেন না। সুতরাং তোমরা তাদের উপর ভরণ-পোষণ কিংবা অন্য কিছুতে সংকীর্ণতা করে তাদের ক্ষতি সাধন করো না। যদি তালাকপ্রাপ্তারা গর্ভবতী হয় তাহলে সন্তান প্রসব পর্যন্ত তাদের ভরণ-পোষণ চালিয়ে যাও। আর যদি তারা তোমাদের সন্তানদেরকে দুগ্ধ পান করায় তাহলে তোমরা তাদেরকে মজুরী প্রদান করো এবং মজুরীর ব্যাপারে ভালোভাবে বুঝা পড়া করো। যদি স্বামী মজুরী দিতে কার্পণ্য করে এবং স্ত্রী তার দাবি মানা ব্যতিরেকে দুগ্ধদানে অমত পোষণ করে তাহলে পিতা যেন তার সন্তানকে দুধ পান করানোর জন্য দুধমা নিযুক্ত করে।
৭. সাবলম্বী যেন তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী ও তার সন্তানের উপর তার সাবলম্বিতা অনুযায়ী ব্যয় করে। আর যার জীবিকা সংকীর্ণ করা হয়েছে সেও যেন তার সাধ্যানুযায়ী ব্যয় করে। বস্তুতঃ আল্লাহ কোন ব্যক্তির উপর তাকে প্রদত্ত সম্পদের বাইরে কোন দায়ভার চাপিয়ে দেন না। তাই তিনি তার সাধ্যের উপরের কিংবা সাধ্যাতীত কোন কিছু চাপিয়ে দেন না। অচিরেই তিনি তার সংকট ও দুর্যোগের পর প্রশস্ততা ও ধনাঢ্যতার ব্যবস্থা করবেন।
৮. এমন অনেক এলাকা রয়েছে যারা নিজেদের প্রতিপালক ও তদীয় রাসূলের নির্দেশ লঙ্ঘন করার ফলে আমি তাদের কুকর্মের কঠিন হিসাব নিয়েছি এবং তাদেরকে ইহকাল ও পরকালে অপমানজনক শাস্তি প্রদান করেছি।
৯. ফলে তারা নিজেদের অপকর্মের কুফল আস্বাদন করলো। বস্তুতঃ তাদের শেষ পরিণতি দুনিয়া ও আখিরাতের ক্ষতিগ্রস্ততাই ছিলো।
১০. আল্লাহ তাদের উদ্দেশ্যে কঠিন শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন। তাই হে জ্ঞানীরা! তোমরা যারা আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের উপর ঈমান এনেছো তোমরা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে তাঁকে ভয় করো। যাতে তোমাদের উপর তা আরোপিত না হয় যা হয়েছিল তাদের উপর। আল্লাহ তোমাদের উপর এমন উপদেশ অবতীর্ণ করেছেন যা তোমাদেরকে তাঁর অবাধ্যতার কুফল এবং তাঁর আনুগত্যের উত্তম পরিণতির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
১১. উক্ত স্মারক হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত রাসূল। যিনি তোমাদের সামনে আল্লাহর এমন সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ পাঠ করে শুনান যাতে কোনরূপ অস্পষ্টতা নেই। যাতে করে তিনি তাঁর উপর ঈমান আনয়নকারী, তদীয় রাসূলকে সত্যায়নকারী ও নেক আমলকারীদেরকে ভ্রষ্টতার অন্ধকার থেকে হিদায়েতের আলোর দিকে বের করে নিয়ে আসেন। বস্তুতঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে ও নেক আমল করেছে আল্লাহ তাকে এমন সব জান্নাতে প্রবিষ্ট করবেন যেগুলোর অট্টালিকা ও বৃক্ষরাজির তলদেশ দিয়ে নদ-নদী প্রবাহিত। তারা তথায় চিরকাল অবস্থান করবে। আল্লাহ অবশ্যই তার জন্য উত্তম জীবিকা রেখেছেন। যেহেতু তিনি তাকে এমন এক জান্নাতে প্রবিষ্ট করেছেন যার জীবিকা অফুরন্ত।
১২. আল্লাহই সাত আসমান সৃষ্টি করেছেন এবং সাত আসমানের মতো সাত যমীনও সৃষ্টি করেছেন। তাতে আল্লাহর জাগতিক ও শরীয়তগত আদেশ অবতীর্ণ হয়। এ আশায় যে, যেন তোমরা জানতে পারো, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাবান; তাঁকে কোন বস্তু অপারগ করতে পারে না। তিনি নিজ জ্ঞান দ্বারা সকল বস্তুকে পরিবেষ্টন করে রেখেছেন। তাই তাঁর নিকট আসমান ও যমীনের কোন কিছুই গোপন থাকে না।
Icon